বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক :: ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে তত প্রচারের ময়দান তপ্ত হয়ে উঠছে কুকথার রাজনীতিতে। রাজনৈতিক নেতারা লাগাম ছাড়া আক্রমণ শানাচ্ছেন একে অপরের বিরুদ্ধে। কেউ পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, কেউ কারোর মৃত্যু কামনা করছেন। কেউ আবার ভোটের পর টাইট দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
এই কুকথার রাজনীতির ভিঁড়ে রাজনৈতিক সৌজন্যতার সাক্ষী থাকলো বাঁকুড়া। দলীয় কর্মসূচীর মাঝেই অন্যতম প্রতিদ্বন্দি সিপিআইএম কার্যালয়ে ঢুকে ওই দলের এক নেতার সঙ্গে দেখা করলেন তালডাংরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তারাশঙ্কর রায়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে যখন যুযুধান রাজনৈতিক দল গুলি পরস্পর-পরস্পরের দিকে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে ব্যস্ত তখন এই সৌজন্যের রাজনীতি যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই অনেকে মনে করছেন।
সূত্রের খবর, দলের বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অরুপ চক্রবর্ত্তীর সমর্থণে শুক্রবার নির্বাচনী প্রচারে বিবড়দা বাজার ও গ্রামে দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করছিলেন তালডাংরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তারাশঙ্কর রায়। ঠিক সেই সময় বিবড়দা বাজার সংলগ্ন সিপিআইএম কার্যালয়ের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সেখানে সটান ঢুকে পড়েন তিনি। ঠিক ওই সময় অন্যান্য দিনের মতো দলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে বসে ছিলেন সিপিআইএমের তালডাংরা এরিয়া কমিটির সম্পাদক হারাধন ঘোষ
ব্লক তৃণমূল সভাপতি তারাশঙ্কর রায়কে আসতে দেখে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। পরস্পর-পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে সামান্য সময়ে দু’জনে কথাও বলেন। পরে এবিষয়ে তালডাংরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তারাশঙ্কর রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিবড়দা বাজারে নির্বাচনী প্রচারের মাঝেই সিপিআইএম কার্যালয়ে কয়েক জনকে বসে থাকতে দেখে ওখানেও ঢুকেছিলাম।
কেন্দ্রকে থেকে বিজেপিকে হঠাতে ওঁদেরও আমাদের দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়েছি। একই সঙ্গে সিপিআইএমের নিজস্ব ভোট এবার তৃণমূল প্রার্থীর দিকেই পড়ুক, এতে অরুপ চক্রবর্ত্তী আরও বেশী ভোটে জিতবেন বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক সৌজন্য নয়, নিজেদের স্বার্থেই তৃণমূল সিপিআইএমের দ্বারস্থ দাবি বিজেপির। ‘বিদায়ী’ সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা এবারও বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ডাঃ সুভাষ সরকারের দাবি, ‘মুমুর্ষু সিপিআইএমকে তৃণমূল বাঁচার তাগিদে আবার বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
সিপিআইএম যেভাবে তৃণমূল বিরোধীতা করে পুরোটাই ‘নাটক’, তৃণমূলের তরফে ওই দলকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। তবে গোটা রাজ্যে যেভাবে প্রচারে ভাষার অবনতি হয়ে চলেছে তাতে সত্যিই এই ঘটনা নজির বিহিনী। কয়েকদিন আগেই বর্ধমান পূর্ব এবং দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোেষ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তাঁর পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাতে শাসক দল তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ জানায়।
নির্বাচন কমিশন তাঁকে শোকজও করেন। এবং ২৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়। তার পাল্টা জবাবে আবার কমিশনকে মেসো বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেদিনই আবার তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ জানায় শাসক দল তাতে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করার অভিযোগ করা হয়েছে। আবার ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ বিডিও অফিসে গিয়ে ভোটের পরে টাইট দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তাতেও তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ জানানো হয়েছে।