বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: হাবরার প্রশাসনিক সভা থেকে সিএএ – এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বার্তাও দিলেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে এই আইন নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। কিন্তু তাদের সব অধিকার থাকবে তো? এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিএএ কার্যকরী হওয়া নিয়ে মতুয়াদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছিল। সোমবার সন্ধ্যায় ঘোষণা, সিএএ আইন কার্যকরী হয়েছে। মতুয়া ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় উচ্ছ্বাস দেখতে পাওয়া যায়। মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক এবার আরও বিজেপির দিকে ঘুরবে। এমন কথাও অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।
উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচি ছিল। প্রশাসনিক কর্মসূচির পর সভা করেন তিনি। সেখান থেকেই মতুয়াদের উদ্দেশ্যে সিএএ নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি। মাত্র দুটি আসনে এখানে ভোটের খেলা খেলছে বিজেপি। সেজন্য এই আইন রাজ্যে তিনি করতে দেবেন না। এমনই কথা জোর গলায় বললেন।
মূলত, রানাঘাট ও বনগাঁ দুই লোকসভা কেন্দ্রে মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস। গতবার এই দুই কেন্দ্রে বিজেপি বড় ব্যবধানে ভোটে জয়লাভ করেছিল। এবারও এই দুই আসনে জিততে মরিয়া বিজেপি। এছাড়া রাজ্যের একটা বড় অংশে মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস। এই ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের আওতায় আনতে মরিয়া তৃণমূল, বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল।
সিএএ চালু করা নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে মতুয়াদের একাংশের মধ্যে। কিন্তু দরখাস্ত জমা দিলে সেইসব মানুষজন অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবেন না তো? অবৈধ নাগরিক তাদের করে দেওয়া হবে না তো? এই আশঙ্কা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন এর আগে মতুয়াদের আধার কার্ড বাতিল করা হয়েছিল? প্রশ্ন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মানুষ নাগরিকত্ব হারালে কী করে রাজ্যের প্রকল্পের সুবিধা পাবেন? স্বাস্থ্যসাথী,কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ একাধিক প্রকল্প মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ পান। তারা কীভাবে সেই প্রকল্পের সুবিধা তখন পাবেন? প্রশ্ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মতুয়া ঠাকুর বাড়ির উন্নয়নের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর কাজ করেছেন। মতুয়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস কাজ করেছেন। জোর গলায় দাবি করলেন তিনি। মতুয়া বড়মা বীনাপানি দেবী অসুস্থ হতেন। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে হাসপাতালে দেখা করতে যেতেন। তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হত।
মমতাবালা ঠাকুর সেই সময় দেখাশোনা করতেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতুয়া ঠাকুর বাড়ির সম্পর্ক অনেক দিনের। এই কথাও জোর গলায় বললেন মুখ্যমন্ত্রী। মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক যাতে তৃণমূলের দিকে থাকে। সে কারণেই কি এমন বার্তা দেওয়া হচ্ছে? প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
শান্তনু ঠাকুর বিজেপির কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি এবারও বনগাঁ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন। শান্তনু ঠাকুর বার বার দাবি করছিলেন, সিএএ চালু করা হবে। কিন্তু কবে? এই বিষয়ে একসময় প্রশ্ন উঠেছিল। শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী প্রচার শুরু করেছিল। কিন্তু এবার শান্তনু ঠাকুরের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়েছে।
মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক কোন দিকে যায়? সেই বিশ্লেষণ করছে রাজনৈতিক শিবির। এমন কথা উঠে আসছে।