বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে দলের পুরোনো দিনের নেতাকর্মীরা আতংকিত বুথ স্তরের কর্মীরা কতটুকু মর্যাদা পাবেন ??

তৃণমূল কংগ্রেস দল জোড়া ফুল প্রতীকে 1998 সাল থেকে লোকসভা দিয়ে প্রথম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে !!
লোকসভা 1998, 2004, 2009, পর্যন্ত 42 টি সিটে প্রার্থী না পাওয়ার কারণে সব সিটে প্রার্থী দিতে পারেনি (যদিও 1998 সালের প্রথম লোকসভা নির্বাচনে আমাদের বিজেপির সঙ্গে জোট হয়েছিল) !!
কারণ ছিল একটাই, নিজের পকেটের টাকা পয়সা খরচ করে তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ প্রার্থী হতে চাইনি !!
2011 সালে দল ক্ষমতায় আসার পর 2014, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে 42 টি সিটে প্রার্থী দেয় !!
অনুরুপ ভাবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ও পৌরসভার 1998, 2003,2008 এর নির্বাচনেও আমরা গ্রাম বাংলার সব সিটে প্রার্থী দিতে পারিনি, এমনকি 2011 সালে 2013 তেও সর্বত্র প্রার্থী দিতে পারিনি !! কারণ নিজের পকেটের টাকা পয়সা খরচ করে তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ প্রার্থী হতে চাইনি !!
দলের জোড়াফুল প্রতীক চেনানোর স্বার্থে দাড়াতেই হবে, এমন দলীয় নির্দেশ থাকার কারণে ঐ নির্বাচন গুলিতে পুরোনো দিনের নেতাকর্মীরা নিজের পকেটের টাকা পয়সা খরচ করে, কেউ কেউ নিজের বাড়ি ঘর জমি জায়গা হালের বলদ বিক্রি করে প্রার্থী হয়েছিল !! নির্বাচনে হারবে জেনেও স্রেফ দলের প্রতীক চেনানোর স্বার্থে !!

আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন যারা নির্বাচনে হারবে জেনেও নিজের গ্যাঁটের টাকা খরচ করে প্রার্থী হয়েছিলেন শুধু জোড়া ফুল প্রতীক চিহ্নটা চেনাবার জন্য !! এখনও তাদের অনেকেই বেঁচে আছেন যারা দলীয় প্রতীক চেনানোর স্বার্থে একজন ব্যাক্তিই বিভিন্ন সময়ে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিভিন্ন নির্বাচনে বিধানসভা, এবং লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন স্রেফ্ দলীয় প্রতীক চেনানোর জন্য !! পৌরসভার ক্ষেত্রেও তাই করতে হয়েছিল !! দলীয় প্রতীক চিহ্নটা ঘাড়ে করে মানুষের দরজায় ঘুরে ঘুরে বেড়ানোর দলীয় নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করায় ছিল একমাত্র কাজ !!
যদিও তারা এখনও অনেকেই বেঁচে আছেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় 2014 র পর থেকে তারা বর্তমান দলীয় নেতৃত্বের কাছে আবর্জনা বা মূল্যহীন কখনো কখনো বোঝা ছাড়া আর কিছুই নয় !!

তাই , স্থানীয় পুরোনো দিনের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে বর্তমান নব্য তৃণমূল নেতারা নিজেদের স্তাবক চাটুকার তৈলমর্দনকারীদের অন্য এলাকা থেকে প্রার্থী হায়ার করে এনে প্রার্থী করতে হচ্ছে (এটা দেখা যাচ্ছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত, পৌরসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে বিধানসভা লোকসভা সব নির্বাচনে) !!
লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে, এই Tradition 2013 সাল থেকে শুরু হয়েছিল, 2014 র পর থেকে প্রকট রুপ নিয়েছে !! তবে লোকসভা নির্বাচনে অন্য রাজ্য থেকে হায়ার করে উড়িয়ে এনে প্রার্থী (যারা দলের জন্য এক ফোঁটাও ঘাম রক্ত ঝরায় নি) করা বা অন্য দল ভাঙিয়ে প্রার্থী করা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটা যারা করেছেন তারাই ভালো বলতে পারবেন !! কিন্তু ফলাফল খুব ভালো হবে বলে মনে হয় না !! তারা বাংলার স্বার্থে কতটুকু কাজে লাগবে, কতটুকু জয় বাংলা স্লোগানের মাহাত্ম্য বুঝবে….. সেটা যারা নিজেদের দলের পুরোনো দিনের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে তাদের প্রার্থী করলেন তারাই ভালো অনুভব করেছেন !!

আর টলিউডি সেলেব্রিটি প্রার্থীরা বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনে জিতে দলের সাংগঠনিক বা সরকারি কাজে কি প্রশংসা পেয়েছেন বা উপকারে লেগেছে, সেটা পরীক্ষিত ও প্রমানিত !! ওটা নিয়ে আর কিছু আলোচনা করছি না .. ‌

মুনমুন সেন, সন্ধ্যা রায়, নুসরাত, মিমি, কবীর সুমন, দেবশ্রী রায়, চিরঞ্জীব, তাপস পাল, শতাব্দী এরকম সবার ক্ষেত্রে দল কতটুকু উপকৃত দলের শীর্ষ নেতারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন !! সেটা চোখের জলে অনুভব করেছেন দলের বুথ স্তরের নেতাকর্মীরা !!

আগামী দিনেও দেখার জন্য বাংলার জনতা-জনার্দন অপেক্ষা করছে !!

দিলীপ সিংহ রায়,
বহরমপুর,
মুর্শিদাবাদ !!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *