বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:চারদিক থেকে তখন শুধু ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার। আর কান্নার শব্দ! সোমবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শুরু হল ঠিক এইভাবেই! ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। একেবারে পিছন থেকে এসে ধাক্কা মালগাড়ির। তীব্রতা এতটাই ছিল যে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের একটি বগি একেবারে উঁচুতে উঠে যায় বিপদজনক ভাবে।
কিন্তু কীভাবে এত বড় ঘটনা (Kanchenjunga Express Accident) ঘটল? তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও প্রাথমিক ভাবে মালগাড়ির চালকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ রেলের। এক বার্তায় রেলের দাবি, সিগন্যাল ফেল করে ওই লাইনে ঢুকে পড়ে মালগাড়ি। যদিও পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেলের এক আধিকারিক অন্য দাবি করেছে।
তিনি জানিয়েছেন, ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ রাঙাপানি এবং আলুয়াবাড়ি অংশে অটোম্যাটিক সিগন্যাল খারাপ ছিল। খুবই ধীর গতিতে চলছিল ট্রেনগুলি। রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ‘টিএ ৯১২’ ফর্ম দিয়েছিলেন শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে। সিগন্যাল খারাপ থাকলে ম্যানুয়াল ভাবে এই ফর্ম দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সিগন্যাল লাল থাকলেও ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ভাবে চালাতে পারবেন চালক। একই নোট দেওয়া হয় ওই মালগাড়িকেও।
আর তাতেই বিপত্তি ঘটেছে বলে দাবি ওই আধিকারিকের। কারণ নোট অনুযায়ী সামনে যে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই বিষয়ে কোনও আপডট ছিল না ওই মালগাড়ি চালকের কাছে। স্টেশনমাস্টারর দেওয়া ম্যানুয়াল ‘টিএ ৯১২’ ফর্ম মেনেই লাইন ধরে এগোতে থাকে সেটি। আর তাতেই বিপত্তি ঘটে যায় বলে দাবি। অন্য একটি সূত্রের খবর, ঘটনার সময় শুধু সিগন্যাল ব্যবস্থা খারাপ ছিল তা নয়, লাইনের কোথায় কী ট্রেন রয়েছে সেই সংক্রান্ত তথ্যও পাওয়া যাচ্ছিল না।
এই অবস্থায় দুর্ঘটনার আসল কারণ খুজতে ঘটনাস্থল অর্থাৎ শিলিগুড়ির রাঙাপানি এলাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিকরা। আছেন রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও। একেবারে ঘটনাস্থলে সরজমিনে ম্যাপ হাতে দুর্ঘটনার কারণ খুতিয়ে দেখছেন তাঁরা। ট্র্যাক সহ সমস্ত জায়গা খতিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদোর্শীদের সঙ্গেও কথা বলে দুর্ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা আধিকারিক চালাচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে ঘটনাস্থল। উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এমনকি জলপাইগুড়ি আপ লাইনে ধিরে ধিরে পরিষেবা স্বাভাবিক বলেই জানানো হয়েছে। শজুধু তাই নয়, ডাউন লাইনেও পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে খবর।