বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
শুক্রবার কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ইডির আধিকারিকরা তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন। তারপরের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে রাজ্যবাসী। ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও, শুক্রবারে ইডির আধিকারিক, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সংবাদ মাধ্যমের ওপরে হামলাকারী কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি সন্দেশখালি ও ন্যাজাট থানা। উপরন্তু ন্যাজাট থানায় ইডির আধিকারিকদের বিরুদ্ধেই এআইআর দায়ের করা হয়েছে।
শেখ শাহজাহানের বাড়ির কেয়ার টেকারের বয়ানে দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে কোনও ওয়ারেন্ট ছাড়াই ইডির আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনী শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যায় এবং তার বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। যদিও ইডির সূত্রে দাবি, শুক্রবারের অভিযানে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট নিয়েই তল্লাশি অভিযানে যাওয়া হয়েছিল। তারপরেও কোনও সহযোগিতা তো দূরে থাক, হামলায় আহত তিন ইডির আধিকারিক ভর্তি কলকাতার হাসপাতালে।
ন্যাজাট থানায় আরও দুটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একটি হয়েছে ইডির তরফে সেখানে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং সরকারি আধিকারিকদের খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইডির এই অভিযোগ নিয়ে সরকারি ভাবে ইমেলে ডিজি ও পুলিশ সুপারের কাছে ভিডিও দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে আগেই। এছাড়াও পুলিশ তরফে স্বতঃপ্রণোদিত যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা হল সরকারি কর্মী, সংবাদ মাধ্যমের ওপরে হামলার বিষয়টিকে সামনে রেখে।
শুক্রবার ইডিরা আধিকারিকরা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গেলে মারমুখী জনতা বারে বারে বলেছিল তারা শেখ শাহজাহানের লোক। সেই ছবি সবার সামনেই রয়েছে। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘন্টা পরেও রাজ্য পুলিশ তাদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
ইতিমধ্যেই ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে, শুক্রবার শেখ শাহজাহানের বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। সেই সময় সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যন্ত্রে করা পরীক্ষায় ধরা পড়ে শেখ শাহজাহানের মোবাইল বাড়িতেই রয়েছে। ধরে নেওয়া যেতে পারে মালিক শেখ শাহজাহান সেই সময় বাড়িতেই ছিলেন। সেই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা বাড়ির দরজার তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। সেই সময় প্রায় হাজার সশস্ত্র গ্রামবাসী তাঁদের ঘিরে ফেলে।
এদিন সকালে অবশ্য সন্দেখখালিতে শেখ শাহজাহানের পাড়ায় কিংবা বাড়ি ছিল সুনশান। শাহজাহানের বাড়ির প্রত্যেকটি দরজার ভিতর ও বাইরে থেকে তালা দেওয়া কারও নজর এড়ায়নি। পাশাপাশি বাড়ির পাশে কালো ত্রিপলে ঢাকা একটি জায়গাও কারও নজর এড়ায়নি। সেখানে লেখা রয়েছে, সেই ত্রিপল সরকারি সম্পত্তি। কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিতরণ করা ত্রিপল কীভাবে নিজের বাড়ির কাজে ব্যবহার করতে পারেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহজাহান, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।