বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
জল্পনা অনেক দিন ধরেই চলছিল। বাংলায় বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া ব্লকের জোট কেমন হবে তা পরিষ্কার ছিল না। কংগ্রেস এবং বামেদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস জোট করবে কিনা তা নিয়ে প্রথম থেকেই ধোঁয়াশা ছিল। অন্যদিকে বিশেষ করে প্রদেশ কংগ্রেস এবং বাম নেতৃত্ব শুরু থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে লোকসভা ভোটে লড়তে চাননি। যদিও সম্ভাবনা ছিল যদি প্রত্যেকবারের মতো দিল্লির হাইকমান্ডের চাপে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা পিছনে হটেন, নিমরাজি হয়ে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে রাজি হন। কিন্তু সেই সম্ভাবনাতেও আপাতত ইতি টানলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো কোনও রাখঢাক না রেখেই সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে তাঁর দল একাই লড়াই করবে। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কোনওরকম রফা হয়নি। যার ফলে তাঁকে একা লড়ার এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর দলের তরফে কংগ্রেসকে যে প্রস্তাবে দেওয়া হয়েছে সেই সমস্ত প্রস্তাব তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। যার ফলে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে আর কোনও অপশন নেই। তাঁকে একাই বাংলায় লড়াই করতে হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও বলেন, জোট কারও একার সম্পত্তি নয়। সবকটি আঞ্চলিক দল ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। কংগ্রেসকে বলা হয়েছিল তাঁরা ৩০০টি আসনে লড়াই করুক। বাকি আসনগুলো আঞ্চলিক দলগুলিকে ছেড়ে দিক। তারপর বাকিটা ভোটের পরে দেখে নেওয়া যাবে।
অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী এদিন খুব স্পষ্ট কয়েকটি বার্তা দিলেন। যার মধ্যে অন্যতম হল, বাংলায় কংগ্রেস অথবা বামেদের তিনি কোনও আসন ছাড়বেন না এবং একাই তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করবে। বিরোধী দলগুলি সঙ্গে সমন্বয় রেখে আগামী দিনে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যেকোনও ধরনের সমঝোতার পথ খোলা রয়েছে। কংগ্রেস জোটের নামে একাধিপত্ব ফলাবে এই বিষয়টি তিনি কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না। কংগ্রেসকেও জোটের মাথা নয় বরং জোটের অংশীদার হিসেবে লড়াই করতে হবে। যদি কংগ্রেস তা করতে পারে তাহলেই আগামী দিনে মমতা তাঁদের পাশে থাকবেন নচেৎ নয়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, কংগ্রেস নতুন করে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে যে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা করছে তা বাংলার মধ্যে দিয়ে গেলেও তাঁকে সৌজন্য হিসাবে একবারও জানানোর প্রয়োজন মনে করা হয়নি। ফলে জোট ধর্ম রক্ষা করা যে শুধু তৃণমূলের কাজ নয়, তাও ফের একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই অবস্থায় বাংলায় বিরোধী মহাজোট না হলে লাভ হতে পারে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই পক্ষেরই। তৃণমূল সব আসনে লড়াই করলে তাদের আসন সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। যা দলগত দিক থেকে অত্যন্ত কৌশলী সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বাম এবং কংগ্রেসের যদি মহাজোট না হয় তাহলে বিজেপি ভোট কাটাকাটির সুবিধা নিয়ে বেশি ভোট এবং আসন দুটোই লাভ করতে পারে। যা সব মিলিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কিছুটা সুবিধা পাইয়ে দেবে।