বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক রাম নবমী ১৭ এপ্রিল। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের পরে লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার মাটিতে রাম নবমী উদযাপন রাজনৈতিক লড়াইয়ের ক্ষেত্রে হয়ে উঠতে চলেছে। ইতিমধ্যেই রাম নবমীতে শোভাযাত্রা বন্ধ করতে তৎপর হলেও খোদ হাইকোর্টের নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন।

সারা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও প্রথম ও দ্বিতীয় দফার নির্বাচন যথাক্রমে ১৯ ও ২৬ এপ্রিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন উত্তরবঙ্গে অভিযোগ করেছেন, বিজেপি রাম নবমীকে সামনে রেখে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে চায়। তবে সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর আবেদন ফাঁদে পা দেবেন না।

২০১১-এ তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলায় আরএসেএসের শাখার সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। বাম আমলে সীমিত জায়গায় হলেও, গত এক দশকে রাম নবমী পালনও রাজ্যে ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ৯ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত রাম মহোৎসব কর্মসূচি চালাচ্ছে।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা শচীন্দ্রনাথ সিং জানিয়েছেন, তারা রাম মহোৎসব পালন করছেন। আর ১৭ এপ্রিল রাম নবমীর দিন রাজ্যের সব পঞ্চায়েত, পুরসভার ওয়ার্ডে কর্মসূচি পালন করা হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্য জুড়ে রাম নবমীর অনুষ্ঠানকে হিন্দু শক্তি ও ঐক্যের প্রদর্শনী হিসেবে তুলে ধরা হবে।

রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, প্রতি বছর বিজেপি রাম নবমীর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। এবছরও সেখানে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। দলের কর্মী ও নেতারা ভগবান রামের ভক্তি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা বলেছেন, রাম নবমীর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হিন্দুদের একত্রীকরণ থেকে তারা রাজনৈতিক লাভের আশা করছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্যে ২৫ টি আসনের লক্ষ্যে হিন্দু একীকরণের প্রয়োজন। রাম নবমী যা করতে সহায়তা করবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন ওই নেতা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, রাম নবমী এবারের ভোটে বিজেপিকে রাজনৈতিক সুবিধা দেবে। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী এব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, এই ধরনের উদযাপন রাজ্যে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতাকে তীক্ষ্ম করবে। যা তৃণমূল ও বিজেপি উভয়েই চায় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

উল্লেখ করা যেতে পারে, গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে রাম নবমীর জমায়েতগুলি রাজ্যে এখন রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে। আর তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরকে হিংসায় উস্কানি দেওয়ায় অভিযুক্ত করেছে। তৃণমূল রাম নবমীতে দাঙ্গা সংগঠিত করতে বিজেপি নিশানা করেছে। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের তুষ্টিকরণের রাজনীতিতেই হিংসা ছড়িয়েছে।

আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন ২০১৭-র পরে ২০১৮ তারপর ২০২৩-এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাম নবমীকে ঘিরে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। শোভাযাত্রা ও সমাবেশকে ঘিরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে হাওড়া, হুগলি-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *