বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের ধরতে ভোররাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে অভিযান চালায় এনআইএ। ধৃত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ছাড়িয়ে নিয়ে হামলা চালায় গ্রামবাসীদের একাংশ। যা নিয়ে শোরগোল সারা রাজ্যে। এদিন এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, মধ্যরাতে অভিযান কেন?

ভোট প্রচারে উত্তরবঙ্গে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেছেন, এনআইএ কি পুলিশকে জানিয়ে এসেছে? মধ্যরাতে অচেনা মানুষ দেখলে যা হওয়ার তাই হয়েছে, এনআইএ-র ওপরে হামলা নিয়ে প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর অভিযোগ, এনআইএ বিজেপির নোংরামিকে সমর্থন করছে। এব্যাপারে দেশজুড়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি তিনি দিয়েছেন।

গত ২০২২-এর দোসরা ডিসেম্বরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল ভূপতিনগর। আদালতের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। এদিন ভোরের অভিযানের পরে বলাই মাইতি, মনোব্রত জানাকে গ্রেফতার করে এনআইএ। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেছেন, নির্বাচনের সময় এই গ্রেফতার কেন?

এদিন অবশ্য সকালেই ভূপতিনগরে এনআইএ-র ওপরে হামলা নিয়ে তৃণমূলের সুর বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। গ্রামের মহিলাদের একাংশ হাতে লাঠি নিয়ে এনআইএ-র গাড়ি ঘেরাও করে ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিকে স্বতঃস্ফূর্ত বলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
গত ৫ জানুয়ারি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়া ইডির আধিকারিকরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেব্যাপারে বাজেট অধিবেশনের জবাবি ভাষণে বক্তৃতা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সন্দেশখালিতে শাহদাহানকে টার্গেট করে ঢুকল ইডি। সেই নিয়ে গোলমাল করে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের মধ্যে ঝগড়া লাগানো হচ্ছে।

সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানের সময়ও রাজ্য পুলিশকে না জানিয়ে অভিযানের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সময় কেন্দ্রীয় শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করে আসা অনেকেই বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা রাজ্যের পুলিশের কাছে তাদের অভিযান নিয়ে বিস্তারিত জাানাতে বাধ্য নয়।
আর সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে কোচবিহারে প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এনআইএ, ইডি, আয়কর ও বিএসএফ-সিআইএসএফ বিজেপির হয়ে কাজ করছে। তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে বিজেপির ক্ষমতার অপব্যবহারের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ভোটের সময় রাজ্যের আধিকারিকদের বদলি করা হলেও, সিবিআই, ইডি ও এনআইএ আধিকারিকদের কেন বদলি করা হয় না?

তিনি আরও বলেছিলেন, ভারতের মতো গণতন্ত্রে এক জাতি এক দল চলতে পারে না। এই ধরনের পরিস্থিতি গণতন্ত্রে সমান সুযোগ দিতে পারে না, বলেছিলেন তিনি। সেই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের মন্তব্য যে ফের বিতর্ক তৈরি করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *