বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ ক্ষমতা আইন (AFSPA) প্রত্যাহার করার বিষয়ে বিবেচনা করবে। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় এমনটাই মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রসাসিত এই অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকারের পরিকল্পনা হল, রাজ্য থেকে সেনা প্রত্যাহার করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া। তিনি বলেছেন, এর আগে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশকে বিশ্বাস করা হয়নি, কিন্তু এখন তারা অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিতর্কিত আফস্পা প্রত্যাহার করা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সরকার আফস্পা তুলে নেওয়ার কথা ভাববে। কাশ্মীরের তরুণদের সঙ্গে কথা বলা হবে। সেসব সংগঠনের শিকড় পাকিস্তানে নয়, তাদের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, বিজেপি এবং দেশের সংসদ বিশ্বাস করে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেখানে বসবাসকারী মুসলিম ও হিন্দু সবাই ভারতীয়। সেখানে পাকিস্তান যে জমি অবৈধভাবে দখল করে রয়েছে তাও ভারতের বলে জানিয়েছেন তিনি। এটা ফিরিয়ে আনা প্রত্যেক ভারতীয় ও কাশ্মীরবাসীর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন তিনি।
অমিত শাহ বলেছেন, আজ পাকিস্তান ক্ষুধা ও দারিদ্রে ঘেরা। সেখানকার মানুষজন কাশ্মীরকে স্বর্গ হিসেবে দেখেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, কেউ যদি কাশ্মীরকে বাঁচাতে পারে, তাহলে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদী।

রাজ্যে তফশিলি জাতি ও উপজাতি এবং অন্য অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অমিত শাহ বলেছেন প্রথমবারের মতো মোদী সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে ওবিসিদের সংরক্ষণ করেছে। সেখানে মহিলাদের এক তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত ও স্থানীয় শহুরে সংস্থায় ওবিসি সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সরকার এসসি-এসটিদের জন্য জায়গা করে দিয়েছে। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর থেকে বাস্তুচ্যুত লোকেদের থাকার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেছেন, সেপ্টেম্বরের আগে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হবে। জম্মু ও কাশ্মীরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে প্রতিশ্রুতি নরেন্দ্র মোদী দিয়েছিলেন, তা পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই গণতন্ত্র তিনটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, সেখানে জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। সরকারি সুবিধাগুলি তৃণমূল স্তরে পৌঁছনোর জন্য সরকার প্রতিশ্রুতি বদ্ধ বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ১৯৫৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আফস্পা তৈরির পরে তা প্রথম উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে লাগু করা হয়েছিল। নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ বেড়ে যাওয়ার পরে, সেখানে এই আইন লাগু করা হয়। আফস্পা নিরাপত্তা বাহিনীতে সীমাহীন ক্ষমতা দিয়েছে। ওয়ারেন্ট ছাড়া যেমন কাউকে গ্রেফতার করা যাবে, আবার কাউকে গুলিও করা যাবে। ইচ্ছা করলে নিরাপত্তা বাহিনী কাউকে থামিয়ে তল্লাশিও করতে পারে এই আইনে। কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন না দিলে এক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনও মামলাও করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *