বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: খাতায়-কলমে তিনি বিজেপি সাংসদ। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। যদিও ব্যারাকপুর থেকে টিকিট না পেয়ে বিস্ফোরক অর্জুন সিং।
অর্জুনকে এবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী না করায় তাঁর অনুগামীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। অর্জুন দলবদলের সম্ভাবনা উড়িয়েও দিলেন না। সাফ জানালেন, ধোঁকা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন অর্জুন। প্রার্থী তালিকায় নিজের নাম দেখে কিছুক্ষণ মমতার বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকার পর সোজা দিল্লি চলে যান। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে।
বিজেপির টিকিটে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জেতেন অর্জুন। যদিও পরে তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরেন। আজও ব্রিগেডের মঞ্চে অর্জুন ছিলেন। কিন্তু ব্যারাকপুর আসনে প্রার্থী করা হয় পার্থ ভৌমিককে। যাঁর সঙ্গে অর্জুনের আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক।
বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম-সহ অনেকেই যে অর্জুনকে প্রার্থী না করার অনুরোধ দলের শীর্ষস্তরে করেছিলেন তার পিছনে পার্থ ভৌমিক ছিলেন বলে ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদের ঘনিষ্ঠদের দাবি। যদিও পার্থ এদিন বলেন, অর্জুন সাংসদ ছিলেন, আমি বিধায়ক, মন্ত্রী ছিলাম। দল আমাকে প্রার্থী করেছে। নিশ্চয়ই তাঁকেও সম্মান জানাবে দল।
যদিও অর্জুনের গলায় ভিন্ন সুর। তিনি বলেন, আমাকে টিকিট দেয়নি। আমি দলকে বলেছিলাম ব্যারাকপুরের বাইরে লড়ব না। টালবাহানা করে টিকিট দেওয়া হলো না। এতে দুঃখ নেই। জীবনের অঙ্গ। তবে পার্টি আগে বলতেই পারতো দেবে না। চিন্তাভাবনা করতাম। অন্য কয়েকটা জায়গায় দাঁড়াতে বলেছিল। রাজি হইনি।
অর্জুন আরও বলেন, দেড় বছর এই দলে এলেও কোনও দায়িত্বে ছিলাম না। আমাকে বলা হয়েছিল ব্যারাকপুরের টিকিট দেওয়া হবে। যিনি নিয়ে এসেছিলেন, তিনিই বলেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলল টিকিট দেওয়া হবে না। এটা বিশ্বাসভঙ্গ।
ব্যারাকপুরের সাংসদ আজই তৃণমূল-ত্যাগের ঘোষণা করেননি। সম্ভাবনা উড়িয়েও দেননি। অনুগামীদের বিক্ষোভের কথা শুনে বললেন, আমি কোনও মরশুমি ফল নই। ১২ মাসের ফল। সব সময় মানুষের সঙ্গে থাকি বলে ভালোবাসা পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলব।
অর্জুন আরও বলেন, আক্ষেপ তো থাকবেই। দল টিকিট দেবে বলেছিল। যদি সে কথা না বলত আসতাম না। আমি কোনও দিন কাউকে ঠকাইনি। অন্যান্য টোপ দিলেও রাজি হইনি। কারণ ব্যারাকপুর ছেড়ে আমি যাব না। এখানেই জন্মেছি, মরবও। তৃণমূল ধোঁকা দিয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের খবর, অর্জুনকে হাওড়া বা হুগলিতে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। তাঁর পুত্র পবন সিংকে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসতেও বলা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের যাঁরা দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে দুজনের নাম বলছি না। আরেকজন হলেন অর্জুন সিং।
বিজেপি সূত্রে খবর, অর্জুন তৃণমূলের পতাকা নিলেও তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে যেহেতু সরব হননি, ফলে তিনি যে দল ছেড়েছেন তা অনুভূত হয়নি। তিনি সাংসদ পদও ছাড়েননি। ফলে অর্জুন ফের বিজেপির ঝান্ডা ধরলে অসুবিধার কিছু নেই। যদিও শুভেন্দু বলেন, এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই। দলই সিদ্ধান্ত নেবে।