বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: হুগলী-চুঁচুড়া পৌসভায় অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বকেয়া নিয়ে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে। গত দু’মাস ধরে বেতন না পাওয়ার প্রতিবাদে আজ পৌরসভার অস্থায়ী কর্মীরা বোর্ড মিটিং চলাকালীন পৌর প্রধান, উপ-পৌর প্রধানসহ সকল সিআইসি এবং জনপ্রতিনিধিদের ঘেরাও করেন।

 

এই বিক্ষোভের ফলে পৌরসভার কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।অস্থায়ী কর্মচারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেতন প্রদানে পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা চলছে। কর্মচারীদের একাংশের বক্তব্য, “প্রতি মাসেই বেতন পেতে দেরি হয়। কিন্তু বিগত দুই মাসে আমরা কোনও বেতনই পাইনি। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ জানালেও কোনও সমাধান হয়নি। আমাদের পরিবার আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছে। সন্তানদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন খরচ চালানোও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

অস্থায়ী কর্মচারী রাধেশ্যাম শঙ্খ বণিক জানান, “আমরা রোদ, বৃষ্টি, জ্বর কোনও কিছুকে উপেক্ষা করে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করি। অথচ বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের সাথে এমন অবহেলা কেন? আমাদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে ৬৫ বছর বয়স অতিক্রম করেছেন। অবসরের কথা বলা হলেও কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই আজ আমরা প্রতিবাদে নেমেছি।”

অস্থায়ী কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্য অসীম অধিকারী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা বেতন বকেয়ার সমস্যায় জর্জরিত। আজ আমরা বাধ্য হয়েই বোর্ড মিটিংয়ে আসা পৌর প্রধানসহ সব প্রতিনিধিদের ঘেরাও করেছি। যতক্ষণ না আমাদের দাবিগুলোর সমাধান হয়, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। আমরা স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাই।”
বিক্ষোভকারী কর্মচারীদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে তাদের সঙ্গে বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের তরফে সাময়িক কিছু বেতন প্রদান করা হলেও পূর্ণ বকেয়া মেটানো হয়নি। ফলে অস্থায়ী কর্মচারীদের পরিবার আজ আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে।
এই ঘেরাও ও বিক্ষোভের ফলে পৌরসভায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পৌর কর্তৃপক্ষ বেতন সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কর্মচারীরা তাতে সন্তুষ্ট নন। তাদের দাবি, যতক্ষণ না বকেয়া মিটিয়ে বেতন প্রদানের নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করা হবে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। এই বিষয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার জানান, “আমি বর্তমানে একটি নারীদের প্রতিবাদী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছি। পৌরসভার বেতন সমস্যা সম্পর্কে আমি এখন কিছু জানি না। তবে বিষয়টি জানার পর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হুগলী-চুঁচুড়া পৌরসভার অস্থায়ী কর্মচারীদের এই বেতন বকেয়া সমস্যা দ্রুত সমাধান না হলে শহরের পরিষেবা বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পৌরসভার প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখতে এবং শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *