মদনমোহন সামন্ত, কলকাতা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ :— আগামী দিনে পার্ক বা উদ্যান শুধুমাত্র বিনোদন, প্রাতঃভ্রমণ, ইত্যাদিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং তা পরিণত হবে শিক্ষার অঙ্গ হিসাবে শিক্ষামূলক উদ্যানে।

যাতে শিশু কিশোর বয়সী পড়ুয়ারা, বড়রাও শুধুমাত্র সময় কাটানো বা শরীরচর্চা ছাড়াও উদ্যানে এবং উদ্যানের বাইরে থাকা নানারকম উদ্ভিদের বাংলা নাম, ইংরাজি নাম, তাদের বিজ্ঞানসম্মত নাম জানতে পারেন। প্রকৃতি পাঠের অঙ্গ হিসাবে চলাফেরার ফাঁকে জ্ঞানার্জনও হতে থাকবে। আগ্রহ বাড়বে প্রকৃতিকে রক্ষা করার, তাকে জানার, তাকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার। সেই সঙ্গে নানারকম গাছের বীজ থেকে অঙ্কুরোদ্গম, তার চারা তৈরি করা, তার লালনপালন, অসুখ বিসুখ, চিকিৎসা, ফুল ফল ধরানো সম্পর্কে জানা ও জানানোর এক পন্থা হয়ে উঠতে পারে শিক্ষামূলক উদ্যান।

এমনই ভাবনা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন যাদবপুরের সত্যরঞ্জন খাস্তগীর শিশু ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা মণীষা ভট্টাচার্য ও তাঁর সহকর্মী শিক্ষক শিক্ষিকারা। যাঁদের মধ্যে মৌসুমী মণ্ডল, চন্দ্রিমা চৌধুরী, দ্বৈপায়ন মৈত্ররা বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখেন। এই কাজে তাঁরা সহকর্মীদের তো পেয়েছেনই, পড়ুয়া আর তাদের অভিভাবকরা ছাড়াও কার্যকরী সহযোগী হিসাবে পেয়েছেন কলকাতা পৌরসংস্থার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতা তপন দাশগুপ্ত, ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতা সন্দীপ নন্দী মজুমদারকে। এছাড়াও বিশেষ সহযোগিতা করছেন গলফ গ্রীন কোঅর্ডিনেশন কমিটির সদস্যরা। এ কাজে বিশেষজ্ঞ হিসাবে পাশে পেয়েছেন জগদীশ বসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর কনসালট্যান্ট সায়েন্টিস্ট অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রবীর কুমার সাহা, স্কটিশ চার্চ কলেজের হেড অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. অমিতাভ রায় এবং স্কটিশ চার্চ কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শুভদীপ মজুমদারকে।

তাঁরা সবাই মিলে রবিবার সকাল থেকে দুপুর দক্ষিণ কলকাতার গলফ গ্রীনে গলফ গ্রীন সেন্ট্রাল পার্কে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে মোট তিপান্ন ধরণের বৃক্ষের সমীক্ষা করে তাদের চিহ্নিত করে তাদের নামকরণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং কিভাবে তা রূপায়িত হবে সেই সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও পড়ুয়াদের চেনানোর কাজ শুরু করলেন। এই কাজে আরও সময় লাগবে। প্রতিটি গাছে তাদের পরিচয় লিখিতভাবে থাকবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো।

মণীষা ভট্টাচার্য জানালেন, এই কাজ শেষ হলে তাঁরা পড়ুয়াদের নিয়মিত এখানে নিয়ে আসবেন তাদের এলাকার গাছেদের সঙ্গে পরিচয় করানোর জন্য। তপনবাবু এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে দরকারী সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরা তাঁদের মতামত, পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী দিনে আরও বিজ্ঞানসম্মতভাবে এই কাজে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। সমিতির কোষাধ্যক্ষ সুপর্ণ দাস এই উদ্যোগের সাফল্যের জন্য তাঁদের তরফে আলোচনা এবং অনুমোদন সাপেক্ষে এগিয়ে আসবেন বলে জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *