বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:আইপিএলে বাঙালি ক্রিকেটারদের যেখানে দূরবীন দিয়ে খুঁজে বার করতে হয় সেখানে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম অভিষেক পোড়েল। চন্দননগরের এই তরুণ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান এবারের আইপিএলে বাংলার অন্যতম পতাকা বাহক।

ওপেনিংয়ে ডেভিড ওয়ার্নার ফ্লপ করছেন প্রতি ম্য়াচে। কিন্তু বাংলার তরুণ উইকেট কিপার ব্যাটার অভিষেক পোড়েল প্রতি ম্য়াচেই পাওয়ার প্লে-তে মারমুখি ব্যাটিংয়ে নজর কাড়ছেন।

এবারের আইপিএলে ১৪ ম্যাচে করেছেন ৩২৭ রান, দুটি অর্ধশতরান তাঁর নামের পাশে। স্ট্রাইকরেট ১৫৯.৫১। গত মরশুমে যেখানে মাত্র চার ম্য়াচ সুযোগ পেয়েছিলেন পোড়েল, এই মরশুমে নিজের পারফরম্য়ান্স গ্রাফ এতটাই বাড়িয়েছেন যে দিল্লি টিম ম্য়ানেজমেন্ট তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চে পাঠানোর কথা ভাবেনি। বিগত কয়েক বছর ধরেই বাংলা দলের নিয়মিত সদস্য অভিষেক এবার আইপিএলের আঙিনাতেও মেলে ধরলেন।

আইপিএলের মতো বড় মঞ্চে সাফল্য পাওয়ার জন্য লাগে সঠিক অনুশাসন এবং কঠোর অনুশীলন‌। ৯ বছর বয়স থেকে অভিষেককে কোচিং করানো কোচ বিভাস দাস ওয়ান ইন্ডিয়াকে জানালেন ছাত্রের সাফল্যের ইউএসপি। চন্দরনগরের মেরি পার্কের মাঠ থেকে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আগ্রাসী অর্ধশতরান, যাত্রাপথটা সহজ ছিল না অভিষেকের জন্য।
দাদা ঈশান পোড়েল আইপিএলের দলে থাকলেও সেভাবে সুযোগ পাননি, মূলত দাদার হাত ধরেই বিভাস স্যারের কলকাতার দেশবন্ধু পার্কের কোচিং সেন্টারে যান অভিষেক। জহুরি রত্ন চিনতে ভুল করেননি। কোচিং সেন্টারে আর পাঁচ জনের থেকে অভিষেকের প্রতিভা যে বেশি তা সহজেই বুঝে যান বিভাস স্যার।সেই শুরু তালিমের প্রক্রিয়া।

বরাবরই পরিশ্রমী অভিষেক, অনুশীলনে সব সময়ই নিজেকে উজার করে দেন। এমনকি লক ডাউনের সময়ও বন্ধ রাখেনি অনুশীলন। ছাত্রের অজানা কাহিনী তুলে ধরলেন কোচ। বিভাস দাসের কথায়, ‘যখন লক ডাউন হল তখন কলকাতায় এসে অনুশীলন করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু সেই সময় প্র্যাক্টিসে খামতি রাখেনি অভিষেক। ভোর হতেই চলে যেত মেরি পার্কের মাঠে( কারণ সকাল হলেই পুলিশের টহল শুরু হত) সেখানেই অনুশীলন করত, আমাকে অনুশীলনের ভিডিওটা পাঠাত। আমি ভুল ত্রুটি শুধরে দিতাম।’

কোথায় বাকিদের থেকে অভিষেক আলাদা? এই প্রশ্নে বিভাস দাস বলেন, ‘অভিষেক বরাবরাই খুব সাহসী, যেটা ওর খেলার মধ্যেও প্রতিফলিত হয়। আগ্রাসী খেলতে পছন্দ করে। একইসঙ্গে বলতে হবে ওর বাড়ির সমর্থনের কথা। কারণ অনেক সময়ই পড়াশুনার জন্য বাড়ি থেকে খেলা ছাড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিষেকের ক্ষেত্রে সেটা হয়নিি।’
অভিষেকের জীবনে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের যে বড় অবদান রয়েছে সেটাও মেনে নিলেন বিভাস দাস। তাঁর কথায়, ‘সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো অত বড় মাপের ব্যক্তিত্বের সঙ্গ পাওয়টা বিরাট ব্যাপার, বৃহত্তর পর্যায়ে খেলার জন্য সৌরভের টিপস ওকে অনেক সাহায্য করেছে। সৌরভ ওকে খুব স্নেহ করে।’

তবে সাফল্য্যে মধ্যেও কিছু দুর্বলতা স্যারের চোখে পড়েছে। কারণ স্পিনারদের বিরুদ্ধে শুরু থেকে চালিয়ে খেলতে গেলেই সমস্যায় পড়ছে অভিষেক। এটা নিয়ে আগামী দিনে যে ছাত্রকে আরও পরিশ্রম করতে হবে সেটাও জানিয়ে দিলেন বিভাস দাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *