বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: মানুষের স্মৃতি থেকে নিশ্চই সব মুছে যায় নি। মুছে যায় নি ২০১৯ সালের জামাইষষ্ঠীর দিনের কথা। অভিযোগ ওঠে, সেদিন শাহজাহানের লেঠেল বাহিনী হাজার লোক হামলা চালিয়েছিল হাটগাছি অঞ্চলের ৫৬ নম্বর বুথের বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডলের বাড়িতে।
বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে গুলি করে খুন করা হয়েছিল তাঁকে। বাবাকে নৃশংসভাবে খুন হতে দেখেছিল প্রীতম। সঙ্গে নিজের ও মা-ভাইয়ের প্রাণসংশয়ের ভয় ছিল। ওই অবস্থাতেই প্রদীপের স্ত্রী পদ্মা শ্বশুরের ভিটে ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন। ফিশারি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু একুশের নির্বাচনের পর সেই ফিশারিও শাহজাহান বাহিনী দখল করে নেয় বলে অভিযোগ। তারপর থেকে ছোটখাটো কাজ করে সংসার চালাতেন। সেই প্রীতম এবার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে ৯৬ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ করে।
অভিযোগ ওঠে, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চোখের মনিতে গুলি করে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল প্রদীপকে। তখন তাঁর দুই ছেলেই ছোট। বড় ছেলে প্রীতমের তখন ভালোই জ্ঞান। চোখের বাবাকে ছটফট করে শেষ হতে দেখেছিল। মায়ের হাত ধরে সেদিনের পর দুইভাই গ্রাম ছেড়েছিল। পুলিশের FIR এ প্রথমে শাহজাহানের নাম থাকা সত্ত্বেও পরে নাম সরিয়ে দেওয়া। হাইকোর্টে সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। প্রদীপের সেই ছেলে প্রীতমই নাম উজ্জ্বল করল সন্দেশখালির। উচ্চ মাধ্য়মিকে ৯৬ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে সে। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮৩ পেয়ে বুঝিয়ে দিল সন্ত্রাস মেধা আটকাতে পারে না। এখনও আইপিএস হতে দিল্লির উদ্দেশে পাড়ি দিচ্ছে প্রীতম। প্রীতম বড় হয়ে আইপিএস অফিসার হতে চায়। তার কথায়, “বাবার ‘খুনের’ সময় ‘ঠুঁটো জগন্নাথের’ মতো বসেছিল পুলিশ। সমাজের কীটদের নির্মূল করতে চাই।” ছেলে আজ সফল! দুই ছেলেকে আঁকড়েই যে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছেন পদ্মা। আজ তিনিও সফল। তাঁর লড়াই সফল! সমাজের ‘কীটদের’ মুখে জবাব দিতে পেরেছেন তিনি। স্বামীর ‘খুনি’দের মামলা চলছে আদালতে। ক্ষোভের সঙ্গে প্রীতম বলে, “সমাজের কীটদের নির্মূল করতে চাই।”