বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: বাঙালিরা নীতিনিষ্ঠ ও সৎ বলে যে দীর্ঘ দিনের ধারণা তা নিমেষে ধ্বংস করে দিয়েছে শাসক দলের এক শ্রেণীর নেতা মন্ত্রীরা।

বাংলার লজ্জায় আর মুখ দেখানোর জায়গায় নেই। বাতিল ২০১৬-র পুরো প্যানেল, চাকরি হারালেন ২৩ হাজার ৭৫৩ জন, SSC মামলায় বড় রায়। এদিনের শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক দুটি কথা উল্লেখ করেছেন। বিচারপতি জানিয়েছেন, তাঁদের আর কোনও উপায় ছিল না, তাই এই গোটা প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। দুই. রাজ্য সরকার কোথাও জানত, এই প্যানেলে কোথাও কোনও দুর্নীতি হয়েছে, তার জন্যই সুপার নিউমেরিক পোস্টের আবেদন তারা করেছিল। আইনজীবী সুদীপ্ত বসাক বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ উঠছিল, যে তিনি প্রভাবিত হয়ে এই ধরনের রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে এটাও স্পষ্ট, দুর্নীতি হয়েছিলই। তার পুরো প্যানেল বাতিল করল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অনেক দয়ালু, তাই পুরো প্যানেল বাতিল করেননি।” আইনজীবী আরও বলেন, “শুনানির সময়ে ডিভিশন বেঞ্চ বারবার রাজ্য সরকার ও এসএসসি-কে জিজ্ঞাসা করেছিল কারা প্রকৃত, তার হিসাবটা দিতে। এই হিসাব আদালতে জমা দিতে পারেনি। বরং দেখা গিয়েছে, যত রেকমেনডেশন এসএসসি দিয়েছিল, তার থেকে বেশি লোক চাকরি করছে।

এই রায়ের দুটি দিক আছে। প্রথম হলো শাসকদলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া যে লোভের একটা সীমা থাকা দরকার। আর দ্বিতীয় বাঙালিদের বুঝিয়ে দেওয়া যে ‘সৎ হও’। মামলাকারীদের আইনজীবী বলেন, “২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। সবার মাইনে ফেরত দিতে হবে। ডিএম-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিআই সেটা ডিএম-কে দেবে চার সপ্তাহের মধ্যে। ২০১৬ সালের চারটে নিয়োগ প্রক্রিয়া- গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম- দশম, একাদশ-দ্বাদশ- সকলেরই প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। সবাইকে বেতন ফেরত দিতে হবে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফিরত দিতে হবে।

কিন্তু তৃতীয় একটি প্রশ্নও আছে। যখন নতুন প্রজন্ম দেখছে যে এই রাজ্যে ঘুষ না দিলে সরকারি চাকরি হবে না, তখন তারা কি করবে? বাধ্য হয়ে কেও জমি বিক্রি করে, কেউ মায়ের গয়না বিক্রি করে, কেউবা বাবর জমানো সর্বস্ব দিয়ে ওই চাকরি কিনেছে। তাদের কি হবে? অংকের হিসাব বলছে এই চাকরি বিমরি করে বিক্রেতারা অন্তত ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রোজগার করেছে। তাদের শাস্তি কে দেবে? আদালত পারবে তাদের শাস্তি দিতে? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য সময় দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *