মদনমোহন সামন্ত, কলকাতা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ :—মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ২০১৩ সালের বিজ্ঞপ্তিতে শূন্যপদ ছিল ৩১৮৩। কিন্তু প্যানেল ছাড়ায় নিয়োগ হয় মাত্র ১৫০০ র মত। অভিযোগ, সেখানেও সীমাহীন দূর্নীতি হয়েছে।
মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পাশ প্রার্থী মঞ্চ সভাপতি মনিরুল ইসলাম জানালেন, ২০১০ সালের গেজেটের কোন নিয়ম মানা হয়নি। কী নিয়ম মেনে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে সেটার কোন সদুত্তর নেই কমিশনের আধিকারিকদের কাছে।মাদ্রাসাগুলো শিক্ষক না পেয়ে হাইকোর্টের দারস্থ হলে মহামান্য হাইকোর্ট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের থেকেই নিয়োগের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশকে কার্যকরী না করে নিয়োগ আটকাতে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় সরকার এবং মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমেটির কর্মক্ষমতা রোধ করে দেয়, শিক্ষক চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায়।
তিনি আরও জানান, উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরাও আদালতের দ্বারস্থ হলে তাঁদেরও চারটে মামলায় নিয়োগের নির্দেশ হয়। মাদ্রাসা শিক্ষামন্ত্রী মাননীয়া মমতা ব্যানার্জি বলছেন ৬-৭ হাজার মাদ্রাসাতে নিয়োগ হবে অথচ 6th SLST উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘ ৭ বছর ধরে নিয়োগের জন্য আন্দোলন করলেও তাঁদের নিয়োগ করছেন না। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পাশ প্রার্থী মঞ্চ-এর সভাপতি মনিরুল ইসলাম এদিন বলেন মহামান্য হাইকোর্ট বারংবার নিয়োগের নির্দেশ দিলেও সরকার ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছেন নিয়োগ আটকানোর জন্য।
সেখানেও নিয়োগের নির্দেশ দিলে এখন সুপ্রীম কোর্টে গিয়েছেন নিয়োগ আটকানোর জন্য। অথচ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আইনি জটিলতার কারণে নিয়োগ দিতে পারছেন না। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের তো বারংবার আদালতের নির্দেশ হয়েছে, তাহলে আমাদের ক্ষেত্রে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না কেন? — এই প্রশ্ন এখন সব চাকরিপ্রার্থীদের। অন্যদিকে সরকার শুধু প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কিন্তু উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করছে না। গ্রামের মাদ্রাসাগুলোকে বাঁচাতে শিক্ষক বদলির পূর্বেই উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের দাবিতে আজ মঙ্গলবার ২০শে ফেব্রুয়ারি কালীঘাট অভিযান করে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। যতীন দাস পার্ক মেট্রো ৪ নং গেট থেকে বেরতেই বিশাল পুলিশবাহিনী চাকরিপ্রার্থীদের কালিঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যেতে বাধা দেয়। সেই বাধা উপেক্ষা করে হাজরা মোড় অবরোধ চলে বেশ কিছু সময় ধরে। পুলিশের সাথে কিছুক্ষণ টালবাহানা হওয়ার পর প্রশাসনের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তর ও মাদ্রাসাশিক্ষা দপ্তরে যোগাযোগ করা হয় ও কালীঘাট থানার বড়বাবুর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে ডেপুটেশন কপি জমা দেওয়া হয়।
আশ্বাস দেওয়া হয় আগামী শনিবারের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে তাঁরা রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নিয়ে যাবেন এবং সমস্যার সমাধান করবেন। এর আগেও মাদ্রাসাশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে জট কাটানোর বারংবার বৈঠক হলেও, সর্বমোট ৫ খানা নিয়োগের নির্দেশ হয়েছে। তবুও এখনও কোনও সুরাহা হয়নি উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের। চাকরিপ্রার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগেই সমস্যার সমাধান না হলে কালীঘাটেই আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। কালীঘাটে অবস্থান বিক্ষোভ কররার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থরস্থ হব।