বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::

কয়েকশ বছরের ইতিহাস বুকে নিয়ে অযোধ্যায় মাথা তুলছে রাম মন্দির। প্রাণ প্রতিষ্ঠার (Ram Mandir Inauguration) অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার। তবে অনেকেরই জানা নেই, বাংলার বুকে ঘন জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ে লুকিয়ে আছে আরও এক ইতিহাস। উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কখন রামলাল্লার মূর্তি স্থাপিত হবে, সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য প্রহর গুনছে ৭০০ কিলোমিটার দূরে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় (Purulia Ajodhya Pahar)।

রামায়ণের বর্ণনা অনুযায়ী যেমন অযোধ্যায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাম। তেমনই পুরুলিয়ার (Purulia Ajodhya Pahar) এই পাহাড়ে পড়েছিল রামের পায়ের চিহ্ন। তাই যুগ যুগ ধরে জঙ্গলের মাঝে রামায়ণের গল্প বলে আরও এক অযোধ্যা।

পুরুলিয়ার অযোধ্য়া পাহাড়ের (Purulia Ajodhya Pahar) নাম অনেকেরই জানা। ঘন জঙ্গল, পাহাড়ি পথ, বিশুদ্ধ জলের ঝর্ণা দেখার জন্য ছুটে যান বহু পর্যটক। কথিত আছে বনবাসে থাকাকালীন সীতা ও লক্ষণকে নিয়ে নাকি এই পাহাড়ে একবার আশ্রয় নিয়েছিলেন রাম। তারপর থেকেই এই স্থানের নামও অযোধ্য়া।

বনের মাঝে রয়েছে এক মন্দির। রাম, সীত, লক্ষণের মূর্তি রয়েছে সেখানে। এই পাহাড়ের মাটিতে রাম হেঁটেছিলেন বলেই কথিত আছে। তাই প্রতিদিব বহু ভক্ত পুজো দিতে যান ওই মন্দিরে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক রাত এই অযোধ্যায় এসেছিলেন রাম। সীতা যখন জলের সন্ধান করছেন, তখন নাকি রাম তীর মেরেছিলেন মাটিতে। মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছিল জল। সেই জল পান করেছিলেন সীতা।
সেই পাথরে ঘেরা জলের কুণ্ডটি আজও দেখতে যান ভক্তরা, স্পর্শ করেন ওই মাটি। বাংলার এই অযোধ্যায় মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই দিনযাপণ করেন তাঁরা।আজও একাধিক প্রাচীন রীতি মেনে চলেন তাঁরা। আজও পরবে পরবে শোনা যায় সাঁওতালি নাচ-গান, মাদলের আওয়াজ।

আজও শিকার প্রথায় বিশ্বাস করেন তাঁরা। বৈশাখী পূর্ণিমার রাতে তীর-ধনুক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। চলে যান ঘন থেকে ঘনতর জঙ্গলে। শিকারের আয়োজন থাকে ওই রাতে। এর পরের দিন সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন। আপাতত অযোধ্যায় রামলাল্লা স্থান পাচ্ছেন মন্দিরে, এটা জেনে খুশি পুরুলিয়ার মানুষ। ৫০০ বছর পর কার্যত অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার জন্য তাঁরা ধন্যবাদ দিচ্ছেন মোদী সরকারকে।

অযোধ্যা পাহাড় হল পূর্বঘাট পর্বতমালার একটি বিচ্ছিন্ন অংশ। এই পাহাড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনোরম। মানুষ বিশ্বাস করে এই সব পাহাড়ের গাছপালার নীচেই আশ্রয় নিয়েছিলেন রাম, সীতা ও লক্ষণ। কান পাতলেই শোনা যায় ঝর্ণার শব্দ। পাথরের গা বেয়ে নেমে আসছে জল। এই পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম গোরগাবরু। পাহাড়ের বেশ অনেকটা ওপরেই রয়েছে মন্দির। সেখানে নিত্য পূজিত হন রাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *