বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::

রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে দূরে সরিয়ে রেখে বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মকর সংক্রান্তির সময় গঙ্গাসাগর মেলা দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সম্বোধন করা একটি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গাসাগর মেলার স্বতন্ত্রতার ওপরে জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি এই মেলাকে জাতীয় মেলা হিসেবে চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন গঙ্গাসাগর মেলার ব্যাপ্তিকে তুলে ধরেন এবং বলেন, ভারতে কুম্ভ মেলার পরেই এই মেলার স্থান। মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গা নদী ও বঙ্গোপসাগরের সংযোগস্থলে সংগঠিত এই মেলার ভৌগলিক জাঁকজমক বর্ণনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন গঙ্গাসাগর মেলার ঐতিহাসিক শিকড়ের সন্ধান করেন। তিনি বলেন, ভারত মহাসাগরের মাধ্যমে পূর্ব ভারতের সঙ্গে প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্যের বাণিজ্য চলত।

মুখ্যমন্ত্রী ধর্মীয় তাৎপর্যের কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন, গঙ্গাসাগর মেলা পৌরাণিক। রামায়ণ, মহাভারত ও কালিদাসের রঘুবংশমের মতো প্রাচীন মহাকাব্যে এর উল্লেখ রয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, দেশের মূল ভখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন একটি দ্বীপে গঙ্গাসাগর মেলাই একমাত্র অনুষ্ঠান। এটি বিশ্বজুড়ে এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে তীর্থযাত্রীদের আকর্ষণ করে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত বছর প্রায় এককোটি তীর্থযাত্রী এসেছিলেন। এই বছর স্বাভাবিক ভাবেই সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা রয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীর্থযাত্রীদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। পুরো খরচ রাজ্য সরকার বহন করে বলে জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি আগে কেন্দ্রীয় সরকারকে গঙ্গাসাগর মেলাকে কুম্ভ মেলার মতো জাতীয় মেলা হিসেবে ঘোষণার অনুরোধ করেছিলেন। এব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

এবারের গঙ্গাসাগর মেলা হচ্ছে আট জানুয়ারি থেকে ষোলো জানুয়ারি পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণ শুধুমাত্র অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধিই তুলে ধরে না, বরং এটির জাতীয় স্তরে উন্নীত করার চেষ্টা করে বলে মনে করছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *