বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসম্মানজনক কথা বলেছেন ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সম্পর্কে। এই অভিযোগ তুলে রে-রে করে প্রতিবাদে সরব বিজেপি।
গতকাল বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ ফসকে তাঁর বলে ফেলা কথা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল।
দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক তিনি ভাঙতে দেবেন না বলে জোর গলায় এদিন জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই একের পর এক উদাহরণ দিয়ে তিনি বোঝাতে চাইছিলেন কীভাবে সব ধর্মের জন্য নানা উন্নয়নমূলক কাজ করছে রাজ্য সরকার। মন্দির, চার্চের সংস্কার থেকে জাহের থানের পাট্টা প্রদান, গুরুদ্বার ও ওঙ্কারনাথ মিশনের গেট নির্মাণ, পাথরচাপরি থেকে তারাপীঠ, কচুয়াধামের উন্নয়নের বিস্তারিত খতিয়ানও তুলে ধরেন।
এইসব উদাহরণ দেওয়ার সময়ই খেলার পরিভাষায় ‘ফাউল’ করে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলে বসেন, “অনুকূল ঠাকুর আমার কাছে জমি চেয়েছিল, যেটা স্টেট গভর্নমেন্টের, আমি দিয়ে দিয়েছি”। এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। শ্রীশ্রী অনুকূলচন্দ্র ঠাকুরকে আপনি সম্বোধন না করাতেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের অংশের ভিডিও পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “যুগাবতার পুরুষোত্তম্ শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ১৯৬৯ সালে দেওঘরে দেহ ত্যাগ করেন। উনি কি আপনাকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন জমির ব্যাপারে? এই সব মিথ্যাচারের জন্য আপনি ক্ষমা চান এবং কোনও অভিজ্ঞ মানসিক চিকিৎসাবিদের তত্ত্বাবধানে নিজের মস্তিষ্কের চিকিৎসা করান। আপনার সুস্থতা কামনা করি।”
বিকেলে কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী এর আগে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরকেও অসম্মান করেছিলেন। তিনি যে কথা বলেছিলেন তা মুখে আনা যায় না। তিনি বলে থাকেন, ইসকনকে তিনি নাকি জমি দিয়েছেন। এটা ঠিক নয়। ইসকন জমি কিনেছে শ্রীচৈতন্য নগরী বানানোর জন্য।
শুভেন্দুর কথায়, ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধানকে পাশে বসিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন এরা ভালো কাজ করে, আবার দাঙ্গাও করে! এবার ঠাকুর অনূকূলচন্দ্র সম্পর্কেও তিনি মিথ্যাচার করলেন। এ বিষয়ে ঠাকুরের ভক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শুভেন্দু বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেওঘরে ঠাকুরের ভক্তদের জন্য এইমস গড়ে দিয়েছেন। বিমানবন্দর করে দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেওঘরে গিয়ে ঠাকুরের আশীর্বাদ নিয়ে এসেছেন বলেও জানান শুভেন্দু। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সেই ঠাকুর সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা তাঁর পরিবারের সদস্য ও ভক্তদের সামনে আমরা তুলে ধরব। এই ধরনের অসম্মানজনক মিথ্যাচার বরদাস্ত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থা এখন হয়েছে মুকুল রায়ের মতো। সোডিয়াম-পটাশিয়াম ওঠা-নামা করছে।
মুখ ফসকে কথা বলায় মমতার জুড়ি মেলা ভার বলে এক্স হ্যান্ডলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে এ ব্যাপারে যে মমতার ভালোই প্রতিযোগিতা চলতে পারে তেমন ইঙ্গিতও করেছেন মালব্য। অনুকূল ঠাকুর সম্পর্কে মমতার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের তরফে এখনও কিছু বলা হয়নি।