বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::

 

শুক্রবার সকালে ইডির আধিকারিকদের ওপরে হামলা করে রক্তাক্ত করা হয় সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের গড়ে। সেখানে থেকে ইডির ফিরে যেতে বাধ্য হলেও সেই রেশন দুর্নীতি মামলায় একইসঙ্গে অভিযান শুর হয়েছিল অপর তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর বাড়িতেও। রাত বারোটার পরে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতেও বাধার মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। ইট ছুড়ে ভাঙা হয় গাড়ির কাঁচ।

সতেরো ঘন্টা তল্লাশির পরে শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁকে গাড়িতে তোলার সময় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। মহিলাদের সামনে রেখে করা বিক্ষোভে ইডির গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেন ওই নেতার অনুগামী রা। শেষ পর্যন্ত সঙ্গে যাওয়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান। রাস্তা অবরোধে আসা মহিলাদের সরিয়ে দেন। সরিয়ে দেওয়া হয় অন্য পুরুষ অবরোধকারীদেরও। শেষ পর্যন্ত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সের দিকে রওনা দেন ইডির আধিকারিকরা।

শুক্রবার সকালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে রাতেও। তবে সকালের ঘটনার পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক ভিডিও-র ক্লিপিং তুলে ধরে দাবি করেছিলেন ইডির আধিকারিকদের রক্তাক্ত করার পিছনে রয়েছে উস্কানি। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, তাঁকেও যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী হেনস্থা করতে আসে তাহলে তঋণমূলের কর্মীরা পথে নামবেন কিনা।

এব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকরা ভবিষ্যতে তদন্ত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, যদি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে এইভাবে তদন্তে যাওয়া শুধু কেন্দ্রীয় সংস্থাই নয়, রাজ্যে পুলিশ কর্মীদেরও হামলার মুখে পড়তে হবে এবং রক্তাক্ত হতে হবে।

শুক্রবার গভীর রাতে শঙ্কর আঢ্যর গ্রেফতার প্রসঙ্গে ইডির তরফে জানানো হয়েছে, শ্বশুর বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি নথি ঘেঁটে লেনদেন সংক্রান্ত যে নথি পাওয়া গিয়েছে তা সন্দেহজনক বলে দাবি করা হয়েছে ইডির সূত্রে। প্রসঙ্গত শুক্রবার সকাল প্রায় সাড়ে সাতটা নাগাদ বনগাঁর শিমূলতলায় শঙ্কর আঢ্যের শ্বশুর বাড়িতে হানা দেন ইডির আধিকারিকরা। মধ্যে শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ফের তাঁর শ্বরশুরবাড়িয়ে যায় ইডির দল। সেখানে রাত সাড়ে নটা পর্যন্ত তল্লাশি চলে বলে জানা গিয়েছে।

রাতেই ফের শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে হানা দেন ইডির আধিকারিকরা। সেখান থেকে রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল নেতাকে। শঙ্কর আঢ্যের স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য জানিয়েছেন, সাড়ে সাতটা থেকে তল্লাশি হয়েছে। সবরকম সহযোগিতা করা হয়েছে। এরপর রাত বারোটা নাগাদ একটা কাগজ দেখিয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠি বলে দাবি করে, শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *