বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: কেরলে কংক্রিটের বাড়ি ধসে মালদার তিন শ্রমিকের মৃত্যু।দুর্ঘটনাটি ঘটে কেরল রাজ্যের ত্রিশূল জেলার কোডাকারা এলাকায়।এই দুর্ঘটনার ঘন্টাখানেক পর মৃত তিন শ্রমিকের পরিবারে বিষয়টি ফোন করে কেরল থেকে জানানো হয়।

আর তারপরেই মালদার বৈষ্ণবনগর থানার হাজিপুর এবং গোবর্ধন টোলা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।পাশাপাশি দুটি গ্রামের তিন শ্রমিকের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে ওই পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন বৈষ্ণবনগরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দনা সরকার।প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওইসব পরিবারদের সমস্ত রকম ভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক চন্দনা সরকার।কেরল থেকে যাতে মৃত শ্রমিকদের মৃতদেহ সহজে ফেরানো যায় সে ব্যাপারে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,মৃত তিন শ্রমিকের নাম রবিউল ইসলাম (২১), রবিউল শেখ (১৯)।দুইজনের বাড়ি বৈষ্ণবনগর থানার শোভাপুর পারদেওনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজিপুর এলাকায়।
আব্দুল আলিম (৩১)। বাড়ি কুম্ভীরা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবর্ধনটোলা এলাকায়। গত সপ্তাহের শনিবার এইসব এলাকা থেকেই ১০ জন শ্রমিক কেরলে গিয়েছিলেন কাজ করতে। মূলত এরা নির্মাণ শ্রমিক হিসাবেই ওই রাজ্যে গিয়েছিলেন। কেরলের কোডাকারা এলাকায় মালদা এবং মুর্শিদাবাদের প্রায় ১৫ জন শ্রমিক একটি পুরনো বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে । কিন্তু এদিন সাত সকালেই এই পুরনো বাড়ির দেওয়ালের একটি অংশ ফাটতে শুরু করে।তা দেখে ওই বাড়ির পিছনের সিঁড়ি দিয়ে শ্রমিকরা হুড়োহুড়ি করে পালাতে তৎপর হয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে বাড়ির পুরনো অংশের দেওয়ালে যেখানে ফাটল ধরেছিল,সেখানকার সিঁড়ি দিয়ে ওই তিন শ্রমিক নিচে নামার চেষ্টা করে।তখনই হুড়মুড়িয়ে তাঁদের গায়ের ওপর পুরো একটি কংক্রিটের বাড়ি ভেঙে পড়ে। সেই সময় ওই তিনজন চাপা পড়ে যায়।তড়িঘড়ি তাঁদেরকে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে উদ্ধার করে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানিয়ে দেয়।
মৃত রবিউল ইসলামের এক দাদা মহম্মদ বাইরুল শেখ তিনিও তার ভাইয়ের সঙ্গে কেরলের ওই এলাকায় নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে গিয়েছেন।মোবাইলে তিনি জানিয়েছেন,এদিন সকালে দেওয়ালের ফাটলের আওয়াজ শুনতেই ঘুম চোখে তারা হুড়োহুড়ি করে উঠে পালাবার চেষ্টা করে। সকলের চোখে ঘুম লেগেছিল বলে সহজে কিছু বুঝে ওঠা সম্ভব হয় নি। আমরা পিছনের সিঁড়ির রাস্তা দিয়ে পালাতে গেলেও ভাই এবং তার সঙ্গে আরও দুইজন সামনের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে পালাবার চেষ্টা করে।তখনই কংক্রিটের পুরো দেওয়ালটা ওদের শরীরের ওপর ভেঙে পড়ে। তাতেই চাপা পড়ে যায়।
অপর মৃত শ্রমিক আব্দুল আলিমের স্ত্রী মেরিনা খাতুন বলেন,আমি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।বাড়িতে বৃদ্ধ শশুর এবং শাশুড়ি রয়েছে। সংসারের খরচ জোগাতে স্বামী ভিন রাজ্যে গিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *