বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: দেশের অন্যতম পুরনো বামদল সিপিআইএম লোকসভা নির্বাচনের জন্য তাদের ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা ইউএপিএ, পিএমএলএ-র মতো কঠোর আইন বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইস্তেহারে ভোটারদের কাছে বিজেপি ও তাদের সহযোগীদের পরাজিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ইস্তেহার জানানো হয়েছে ধনীদের ওপরে সুপার ট্যাক্স লাগু করা হবে।

 

সিপিআইএমের ইস্তেহারে কেন্দ্রে একটি বিকল্প ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। সিপিআইএমের তরপে বলা হয়েছে, দেশে লোকসভা নির্বাচন এমন একটা সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দেশ নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের দশকব্যাপী শাসনে অস্তিত্বের সংকটের মুখোমুখি।

সিপিআইএমের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, দেশের শিরায় শিরায় সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানো হচ্ছে। আঠারোতম লোকসভায় ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক চরিত্রকে রূপান্তরিত করার বিজেপির চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিজেপির অধীনে দেশে তীব্র অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা, হিংসা, ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদীর দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সিপিআইএমের ইস্তেহারের মূল বৈশিষ্ট্য

ইস্তেহারে বলা হয়েছে, ঘৃণার মন্তব্য এবং অপরাধের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করা হবে। পাশাপাশি সিএএ বাতিলের প্রতিশ্রুতিও তারা দিয়েছে।

বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ বং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন বা পিএমএলএ-র মতো কঠোর আইন বাতিল করা হবে।

স্বাধীন সংস্থার স্বায়ত্তশাসন রক্ষা ও শক্তিশালী করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সিপিআইএমের তরফে সরকারি সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের পুনর্বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

সাধারণ সম্পদ কর এবং উত্তরাধিকার কর-সহ অতি-ধনীদের ওপরে একটি আইন আনার করা বলেছে ইস্তেহারে।

বর্তমান শ্রম কোড পরিস্থাপন করতে আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সিপিআইএমের তরফে ফসলের ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের মতো আইনি বিধানের করা বলা হয়েছে ইস্তেহারে।

সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে কাজের অধিকারকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি সিপিআইএমের তরফে দেওয়া হয়েছে।

ইস্তেহারে বলা হয়েছে সরকারি ও পাবলিক সেক্টরের শূন্যপদগুলি জরুরি ভিত্তিতে পূরণ করা হবে।

এমএসএমইগুলিকে শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করা হবে, যাতে সেগুলি চাকরির সুযোগ তৈরি করতে পারে।

এমজিএনআরইজিএ-র বাজেট বরাদ্দ দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি সিপিআইএমের ইস্তেহারে দেওয়া হয়েছে।

সিপিআইএমের তপফে একটি নতুন আইন তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেখানে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে শহুরে কর্মসংস্থানকে নিশ্চিত করা এবং বেকার ভাতা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

শিক্ষার জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করে জিডিপির ছয় শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি সিপিআইএমের ইস্তেহারে দেওয়া হয়েছে।

মোট কেন্দ্রীয় করের পঞ্চাস শতাংশ রাজ্যগুলিকে হস্তান্তর করার কথাও ইস্তেহারে বলা হয়েছে।

রাজ্যপাল বাছাই করতে প্যানেলের কথা বলা হয়েছে সিপিআইএমের ইস্তেহারে।

ইস্তেহারে জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর কথা বলা হয়েছে।

বেসরকারি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের জন্য আইনের পক্ষে সিপিআইএম। আদিবাসীদের সাংবিধানিক ও আইনি সুরক্ষার কথাও বলা হয়েছে।

এছাড়া অন্য বিষয়গুলির মধ্যে জাত ভিত্তিক শুমারি, রাজনৈতিক দলগুলিকে কর্পোরেট অনুদানের ওপরে নিষেধাজ্ঞার কথাও বলা হয়েছে ইস্তেহারে।

প্রসঙ্গত, সিপিআইএম কেরল ও বাংলায় যথাক্রমে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মুখোমুখি হচ্ছে। যারা বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া ব্লকের অংশীদার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *