বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক :: লোকসভা নির্বাচনের সময় জনসুরাজ যাত্রায় ব্যস্ত প্রশান্ত কিশোর। মাঝে মধ্যে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছে, আর বিশেষ কিছু বিষয় নিয়ে মন্তব্য করছেন। গত কয়েকদিনের মধ্যে পরিবারবাদ নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। এবার তাঁকে সরব হতে দেখা গেল জনগণকে বিনামূল্যে পরিষেবা প্রদান করা নিয়ে।

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের এক অনুষ্ঠানে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, দেশের রাজনীতিকরা মনে করে বিনামূল্যের এলপিজি, মিক্সি কিংবা কৃষকদের পেনশন তাদের বছরের পর বছর নির্বাচনে জিততে সাহায্য করবে। তাই কোনও দল কোনও একটি বিনামূল্যের পরিষেবার প্রতিশ্রুতি দিলে, অন্য দল তাকে ছাঁপিয়ে অন্য বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

প্রশান্ত কিশোরের মতে, সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যের প্রতিশ্রুতি কোনওভাবেই দীর্ঘস্থায়ী ভোটের আনুগত্য তৈরি করে না। বিনিয়োগের মাধ্যমে তৈরি হওয়া চাকরির মাধ্যমে সেই আনুগত্য তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

প্রশান্ত কিশোর উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, অন্ধ্র প্রদেশে নির্বাচনের সময় রাস্তা কিংবা স্কুলের প্রতিশ্রুতি না দিয়ে মহিলাদের বিনামূল্যে পরিষেবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কারণ তাঁরা ভোট দেবে। কিন্তু যে অর্থ বিলি করার কথা বলা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট কোনও নেতা বা রাজনৈতিক দলের নয়, সেটা সাধারণ মানুষের টাকা।
তিনি বলেছেন, এটা হয়েছে তেলেঙ্গানায়, হয়েছে রাজস্থানে। দেশের সব সরকারই বিনামূল্যের পরিষেবা দিয়ে থাকে। তারপরেও তেলেঙ্গানা ও রাজস্থানে সরকার পরিবর্তন করে দিয়েছে সাধারণ মানুষ। সেখানেই প্রশ্ন আসছে, কেন এটা হল। প্রশান্ত কিশোর নিজেই উত্তর দিয়ে বলেছেন, মানুষ রিসোর্স ম্যানেজমেন্টেই নয়, পোটেনশিয়াল ম্যানেজমেন্টেও উৎসাহী।

ভোট কুশলী বলেছেন, রাজনীতিকরা পোটেনশিয়াল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজই করছেন না। তিনি বলেছেন, সাধারণ মানুষকে মিক্সি বিলি করা হয়েছে ভোটের আগে। কিন্তু কতবার তা দিয়ে ভোট চাওয়া যাবে? সেখানে যদি কেউ শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিতে বিনিয়োগ করেন, যা হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতকে উজ্জ্বল করার ব্যবস্থা করেন, তাহলে সেই নেতা বা নেত্রীর বারে বারে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

প্রসঙ্গত ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সরাসরি তৃণমূলের পরামর্শদাতা হিসেবে যুক্ত ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। সেই নির্বাচনে আগে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি চালু করা হয়, আর তারপরে মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীর ভান্ডার চালু করা হয়। ২০২৪-এর নির্বাচনের আগে সেই লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকার পরিমাণ বেড়েছে। বিজেপি বলছে, তারা ক্ষমতায় আসলে সেই টাকাই আরও বাড়াবে। এই রাজনীতিরই বিরোধিতা করছেন প্রশান্ত কিশোর। তবে বিনামূল্যে পরিষেবার উদাহরণ দিতে গিয়ে প্রশান্ত কিশোর লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *