বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী এই সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আয়োজিত এই সভায় পৌরসভা, পঞ্চায়েত ও দলের উচ্চ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বুথ স্তরের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই কর্মীসভাটি চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের উদ্যোগে আয়োজিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও চাঁপদানি বিধানসভার বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন, হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধারা সহ চুঁচুড়া বিধানসভার সকল তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সমর্থক। কর্মীসভার গুরুত্ব এবং দলের আগামী দিনের রণকৌশল স্পষ্ট করতে সভামঞ্চ থেকে পরিবহনমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন।
মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেন, “ছোট থেকে বড়—প্রত্যেক বুথ কর্মী আমাদের দলের সম্পদ। আপনাদের পরিশ্রমেই তৃণমূল কংগ্রেস বারবার বিজয় লাভ করেছে, আগামীতেও করবে।”
তিনি দলীয় কর্মীদের আহ্বান জানান যে, আগামী সাত দিনের মধ্যে বুথভিত্তিক সঠিক ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে এবং তা দলের কাছে জমা দিতে হবে। তিনি বলেন, “বিগত দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে বিরোধীরা ভুয়া ভোটার সংযোজন করে নির্বাচন প্রভাবিত করেছে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, প্রতিটি বুথে সঠিক পরিসংখ্যান রাখতে হবে।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে হলে আমাদের বুথভিত্তিক সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। প্রতিটি ভোট গুরুত্বপূর্ণ, তাই এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।”
মন্ত্রী সভায় বক্তৃতা রাখতে গিয়ে ২০১১ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে হওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুয়ারে সরকার, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রীসহ একাধিক প্রকল্প রাজ্যের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন ছিল প্রত্যেক দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার যেন সরকারি পরিষেবা সহজে পায়। সেই লক্ষ্যে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছেন।”
মন্ত্রী আরও বলেন, বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস মিলিতভাবে পশ্চিমবঙ্গে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়। কিন্তু যতদিন তৃণমূল সরকার আছে, ততদিন তারা রাজ্যকে ভাগ করতে পারবে না।”
মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেন, “২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে ২৫০-রও বেশি আসন জয় করতে হবে। চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
তিনি দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান এবং বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করলেই বিরোধীদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে এবং বাংলায় উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।”
এই কর্মীসভা তৃণমূল কংগ্রেসের আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করল। নেতাদের বক্তব্য এবং কর্মীদের উৎসাহ দেখে স্পষ্ট যে, তৃণমূল কংগ্রেস ২০২৬ সালের নির্বাচনে জয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে প্রস্তুত।