বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল সাফল্যের বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল মহিলা ভোটারদের অবস্থান। লোকসভা নির্বাচনেও নারীশক্তির মন জয়ে মরিয়া তৃণমূল ও বিজেপি।
আজ বারাসতে মোদীর নারীশক্তি বন্দন কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন সন্দেশখালির মহিলারাও। তাঁদের সামনেই মোদী অল-আউট গেলেন নারীশক্তির সমর্থন বিজেপির ঝুলিতে আনার জন্য।
সন্দেশখালির প্রসঙ্গে তুলে নরেন্দ্র মোদী বলেন, টিএমসি সন্দেশখালির নারীশক্তির উপর অত্যাচার করে ঘোর পাপ করেছে। এতে যে কারও মাথা লজ্জায় নত হয়। কিন্তু মা-বোনেদের দুঃখে তৃণমূলের কিছু যায় না। অপরাধীকে বাঁচাতে পুরো শক্তি লাগাছে টিএমসি সরকার। যদিও হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও ঝটকা খেয়েছে।
মোদী বলেন, গরিব, দলিত, বঞ্চিত, আদিবাসী পরিবারের বোন-বেটিদের সঙ্গে টিএমসি নেতারা নানা জায়গায় অত্যাচার করছে। টিএমসি সরকার তাদের দলের অত্যাচারী নেতাদের উপর ভরসা রাখছে, বোন-বেটিদের উপর ভরসা নেই। এই পরিবেশ দেখে বাংলা ও দেশের মহিলারা আক্রোশিত।
মোদীর কথায়, নারীশক্তির আক্রোশের জোয়ার সন্দেশখালিতে সীমিত থাকবে না। গোটা বাংলায় সন্দেশখালির ঝড় উঠবে। তৃণমূলকে ধ্বংস করতে নারীশক্তি জেগে উঠেছেন, মহিলারা পথে নেমেছেন। সন্দেশখালি দেখিয়েছে, বাংলায় বোন-বোনেদের হয়ে জোরালো আওয়াজ তুলতে একমাত্র বিজেপিই রয়েছে।
আজ এই সভার কিছু আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন। এর কিছুক্ষণ পরে বাংলা-তথা গোটা দেশে নারী সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, নারী সশক্তিকরণ-সহ নানা ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের বিস্তারিত খতিয়ান দেন মোদী। আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ৫ লক্ষ টাকা অবধি বিনামূল্যে চিকিৎসার কথাও যার মধ্যে ছিল।
মোদী বলেন, তুষ্টিকরণ, তোলাবাজের টিএমসি সরকার বোন-বেটিদের সুরক্ষা দিতে পারে না। কেন্দ্রীয় সরকার ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়ার ব্যবস্থা। ভারতীয় নারীশক্তি বিকশিত ভারতের সশক্ত স্তম্ভ। মহিলা হেল্পলাইন চালু করেছে, যদিও তা বাংলায় কার্যকর হতে দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার।
মোদী জানান, জনধন যোজনায় বাংলার ৩ কোটি মহিলার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। গত ১০ বছরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের সংখ্যা ১০ কোটির বেশি, বাংলায় ১ কোটি ২৫ লক্ষের বেশি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। স্বরোজগার যোজনায় ৮ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়া হয়েছে, বাংলায় সেল্ফ হেল্প গ্রুপ পেয়েছে ৯০ হাজার কোটি টাকা।
কৃষি, কুটির শিল্প, মাছ ধরা, প্রাণীপালন, হস্তশিল্প-সহ নানা ক্ষেত্রে মহিলাদের অবদানের কথা উল্লেখ করে মোদী তুলে ধরেন আরও কয়েকটি প্রকল্পের কথা। তিনি বলেন, সারা দেশে ৩ কোটি লাখপতি দিদি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। ১ কোটি লাখপতি দিদি রয়েছেন দেশে, তাঁদের মধ্যে বাংলায় রয়েছেন ১৬ লক্ষের বেশি।
মুদ্রা যোজনাতেও মা-বোনেদের স্বাবলম্বী করে তোলা হচ্ছে। নমো ড্রোন দিদি প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দিয়ে মহিলাদের ড্রোন দেওয়া হবে, যা কৃষিকাজে লাগবে। যদিও ইন্ডিয়া জোটের সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প রূপায়ণে বাধা দিচ্ছে, কাজের গতি শ্লথ করছে বলেও অভিযোগ করেন মোদী।
মোদী বলেন, বাংলায় বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প লাগু করা হয়নি। উজ্জ্বলা গ্যাসের ১৪ লক্ষের বেশি আবেদন ফেলে রাখা হয়েছে। নলবাহিত পানীয় জলের প্রকল্পের গতি শ্লথ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রসূতী মৃত্যুর হার কমাতে পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। টিকা দেওয়া হচ্ছে, গর্ভবতীদের ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের শৌচাগার থেকে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়ার প্রকল্পও চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।