বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: নেপালের দীর্ঘদিনের প্রথা হলো কোনো প্রধানমন্ত্রী শপথ নেওয়ার পরে ভারতে আসেন। ভারত তাঁকে সাদরে আমন্ত্রণ জানান।
কিন্তু সম্প্রতি ভারতের একাধিক প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে চিন নানা ফাঁদে ফেলে নিজেদের দিকে টেনে নিচ্ছে। ঠিক সেভাবেই টেনে নিলো নেপালকে। চিন ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের নামে ঋণের ফাঁদ পেতে বহু দেশকে কার্যত কবজা করে ফেলেছে। বরাবর এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে ভারত। চিনের ‘ফাঁদে’ পা দিয়েছে পড়শি দেশ নেপালও। দীর্ঘ বোঝাপড়ার পর বেল্ট অ্যান্ড রোডে যোগ দিয়ে বেজিংয়ের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করেছে কাঠমান্ডু। স্বাভাবিক কারণেই এতে ক্ষুন্ন ভারত। ভারত বুঝতে পারছে চিন ভারতের সমস্ত প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ঋণের জালে জড়িয়ে নিজেদের তাবেদার বানাতে চাইছে। সেই ইঙ্গিত সম্প্রাতি পাওয়া গেছে বাংলাদেশের আচরণে। এবার নেপাল। চলতি বছর তৃতীয়বার নেপালে ক্ষমতায় ফিরেছেন কেপি শর্মা ওলি। আর প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পর প্রথম বিদেশ সফরে চিনে গিয়েছেন তিনি। স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি ভারতে না এসে প্রথম সফরে চিনে গেলেন কেন?
সূত্রের খবর, এই সফরেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর বেল্ট অ্যান্ড রোডে যোগদান নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তিনি। ২০১৭ সালে প্রাথমিকভাবে এই দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। তার পর চুক্তি সম্পূর্ণ হওয়া নিয়ে সাত বছর নানা আলোচনা হয়েছে। অবশেষে এই চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, বুধবার কীভাবে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটবে তা নিয়ে দুদেশের রাষ্ট্রনেতা ও প্রতিনিধিরা আলাদা করে বৈঠকে বসেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে ভারত উপমহাদেশে কৌশলগত অবস্থান মজবুত করছে চিন। বাংলাদেশে এই প্রকল্পের জাল ছড়াতে মরিয়া তারা। সাম্প্রতিক সময়ে ওপার বাংলায় আনাগোনা বাড়িয়ে চিনা আধিকারিকরা। অন্যদিকে, চিনের ফাঁদে পা দিয়ে ঋণের বোঝায় জর্জরিত আর এক পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কা। বেল্ট অ্যান্ড রোডে নাম লিখিয়েছে পাকিস্তানও। আর এই বিতর্কিত প্রকল্পের একটি অংশ গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে। যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত। সব মিলিয়ে চিন প্রায় ঘিরে ফেলতে চাইছে ভারতকে – যা ভারতের পক্ষে যথেষ্ট আশনি সংকেত।