বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন তাপস রায়। দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের সদস্য পদও ছেড়েছেন। বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তাপস। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে নিজেকে মুক্ত পাখি বলে দাবি করলেন। কিন্তু কেন তিনি তৃণমূলের সঙ্গ ছাড়লেন?

 

দুই দশকের বেশি সময় ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্বস্ত সঙ্গী ছিলেন। সেই তাপস এখন রাজনৈতিক সঙ্গী বদল করতে চলেছেন? বিজেপি যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। তবে সেই বিষয়ে এখনও পরিষ্কার কোনও বার্তা তাপস রায়ের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি।

তাপস রায়ের অন্দরে ক্ষোভ, অভিমান জমা হয়ে গিয়েছিল। সেক্ষেত্রে অন্যতম কারণ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাপস রায়ের আচকাআচকি সম্পর্কের কথা রাজনৈতিক মহল বহু বছর ধরেই জানে। তাপস রায় কখনও এই বিষয়ে রাখঢাক করেননি। উত্তর কলকাতা অঞ্চলে তিনি যাতে কোনও দায়িত্ব না পান। বিধানসভা ভোটে কলকাতা থেকে যাতে না লড়তে পারেন। সেই ব্যবস্থাও সুদীপ বন্দোপাধ্যায় করে রেখেছিলেন। এমনটাই অভিযোগ তাপস রায়ের।

উত্তর কলকাতার বাসভূমি হলেও তাঁকে রাজনীতি করতে হত বরানগর এলাকায়। কোনওভাবেই উত্তর কলকাতায় তাপস রায়কে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের রাজনীতিতে ঢুকতে দেননি। এমন অভিযোগ সামনে এসেছে।

গত ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের দিন তাপস রায়ের বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি হানা দেয়। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেই সেই অভিযান হয়েছিল। এমন অভিযোগ করেছেন তাপস। ৫২ দিন হয়ে গেল। দলের পক্ষ থেকে এই নিয়ে মন্তব্য করা হয়নি। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কোনও কথা এই বিষয়ে বলেননি।

তাপস রায় নিজেকে সৎ রাজনীতিবিদ বলে দাবি করেছেন। তাঁর নামে কোনও দুর্নীতি নেই। এমনকী ইডির হানার পরেও বিরোধী নেতৃত্বও তাপস রায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু নিজের দল কোনও মন্তব্য করল না। সেই নিয়ে মনের মধ্যে যথেষ্ট ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল।
সন্দেশখালির ঘটনাও নাড়া দিয়েছে তাঁকে। বিভিন্ন জায়গায় তিনি সন্দেশখালির সম্পর্কের বিরূপ মন্তব্য পাচ্ছেন। গোটা বিষয়টি ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি তিনি। শেখ শাহজাহানদের পক্ষে দলের নেতৃত্ব রয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার হয়ে কথা বলেছেন। শাহজাহানদের পাশে দল দাঁড়ায়। কিন্তু তাপস রায়দের মতো নেতাদের পাশে নেতৃত্ব থাকেন না। এমনই অভিযোগ করেছেন তাপস।

দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের হয়ে তাপস রায় ভোট করিয়েছেন। ওই সংসদীয় এলাকায় তাঁর বিধানসভা। তাপস রায়ের বাড়িতে ইডি হামলার পরেও সৌগত রায়ের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তা নিয়েও হতাশা তৈরি হয়েছে তাপস রায়ের গলায়। দলের মধ্যে কয়েক জন দুর্নীতি করছে। আর সেই কলঙ্কের বোঝা অন্যদের নিতে হচ্ছে। তিনি এই কলঙ্ক আর নিতে চান না। এমনই জানিয়েছেন তাপস।
পুরনো নেতারা দলের কঠিন সময়ে সব সময় থেকেছেন। কিন্তু তারা কোনওভাবেই স্বীকৃতি পায়নি। দলের মধ্যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এমন অভিযোগ তাপস রায় নিজেও করেছেন। বলা ভালো, গত ১২ বছরের বিধায়ক সময় সামান্য দিনের জন্যই মন্ত্রী হয়েছিলেন তাপস রায়। খুব একটা বড় দায়িত্ব তাঁর উপর ছিল না।

তিনি কি রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিলেন? না কি এবার অন্য কোনও রাজনৈতিক সঙ্গ? তাপস রায়ের বউবাজারের কার্যালয়ের নীল সাদা রং বদলাতে শুরু করেছে বলে খবর। তাহলে কি সেখানে এবার অন্য কোনও বিশেষ রং দেখা যাবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *