বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:গুজরাতে খুন ৬ বছরের শিশুকন্যা। প্রথম শ্রেণীর ওই পড়ুয়াকে নিজের গাড়িতে বসিয়ে যৌন হেনস্থার চেষ্টা করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক। একরত্তি শিশু তাতে বাধা দিলে শ্বাস রোধ করে খুন করা হয় তাকে।

 

 

এরপর শিক্ষকই স্কুলের পিছনে ফেলে দেয় তার মৃতদেহ। পুলিশ তদন্তে নেমে গ্রেফতার করে ৫৫ বছর বয়সী ওই শিক্ষককে। ঘটনাটি ঘটে গুজরাতের দাহোদ জেলায়।

ওই শিশুর মা জানায়, প্রতিদিন প্রধান শিক্ষকের গাড়িতে করেই স্কুলে যেত তার কন্যা। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০.২০ নাগাদ তিনি নিজেই কন্যাকে প্রধান শিক্ষকের গাড়িতে তুলে দেন। এরপর তাকে বিদায় জানান। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে গেলেও কন্যার কোনও খোঁজ পাননি তিনি। শ্রেণী কক্ষের সামনে মেলে তার জুতো ও ব্যাগ। অনেক খোঁজাখুঁজির পর স্কুলের পিছনে তার নিথর দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। শিশুর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে তলব করে পুলিশ। কিন্তু সে জানায়, স্কুলে ছাত্রীকে ছাড়ার পর কোনও একটি কাজে দূরে কোথাও গেছিল সে। ওদিকে ওই পড়ুয়ার অন্যান্য শিক্ষক–শিক্ষিকা ও সহপাঠীরা জানায়, ঘটনার দিন স্কুলে দেখাই যায়নি ওই পড়ুয়াকে। তাহলে কোন পথ দিয়ে শিশুর দেহ স্কুলের পিছনে পৌঁছে গেল? পুলিশের সন্দেহ হয়, শিক্ষক মিথ্যা কথা বলছে। এরপর তার মোবাইলের লোকেশন দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ঠিক সময়েই সেদিন স্কুলে পৌঁছেছিল প্রধান শিক্ষক। ফের পুলিশ প্রশ্নোত্তর শুরু করলে এক পর্যায়ে ভেঙে পড়ে অভিযুক্ত। সে কবুল করে, যৌন হেনস্থার চেষ্টা করলে ওই পড়ুয়া বাধা দেয় এবং চেঁচামেচি শুরু করে। চিৎকার রুখতেই শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। গাড়িতেই মৃতদেহ রেখে, স্কুলে পৌঁছে নিজের গাড়ি লক করে দেয় শিক্ষক। এরপর সময় মত তার দেহ স্কুলের পিছনে ব্যাগ এবং জুতো রেখে দেওয়া হয় শ্রেণীকক্ষের সামনে; যাতে সকলে মনে করে সেদিন স্কুলে এসেছিল ওই পড়ুয়া।
এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে গোবিন্দ নাথ (৫৫) নামে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পড়ুয়ারা যদি তাদের শিক্ষক–শিক্ষিকাদের কাছেও নিরাপদ না থাকে, তবে তারা নিরাপত্তার খোঁজ করবে কোথায়? কেন একজন শিক্ষকের লালসার শিকার হবে ৬ বছরের পড়ুয়া? কেন তাদেরকে সুরক্ষা দিতে অপারগ হবে প্রশাসন?
সম্প্রতি পুরোনো আইন–কানুনের কাঠামোকে বিদায় জানিয়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা চালু করেছে কেন্দ্র সরকার। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, নতুন আইন সুরক্ষা কবচ দেবে মহিলাদের। কিন্তু কোথায় সেই সুরক্ষা? আইপিসি নাম পাল্টে হল ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। শুধু পাল্টাল না নারীদের অবস্থান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *