বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:ঠিক ২৫ বছর আগে মে মাসে বরফ গলা শুরু করলেই পাকিস্তানের মদতে কার্গিল সীমান্ত দিয়ে ভারতের ঢুকে পরে বিরাট পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী। আসলে জঙ্গি গোষ্ঠীর নামে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী।
তার পরের তিন মাস তো ইতিহাস। সেই যুদ্ধের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বিজয়’। ৩ মে থেকে শুরু করে ২৬ জুলাই পর্যন্ত চলেছিল কার্গিলের যুদ্ধ। প্রায় তিন মাস ধরে। ২০২৪ সালে সেই ‘অপারেশন বিজয়’-এর ২৫ বছর পূর্তি। আনন্দ ঘন সেই মুহূর্তের কথা সমস্ত ভারতবাসী মনে রেখেছে। কার্গিল যুদ্ধে ৫০০ জনেরও বেশি ভারতীয় জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। দুই দেশের সম্পর্ক সে সময় ভিন্ন এক মাত্রায় পৌঁছেছিল। সমস্ত ভারতবাসী তখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুটছে। ১৯৯৯ সালের মে থেকে জুলাই জম্মু এবং কাশ্মীরের দ্রাস-কার্গিল সেক্টরে চলে লড়াই। পাকিস্তানের দিক থেকে নাগাড়ে অনুপ্রবেশ চলতে থাকে কার্গিলে। পাকিস্তান প্রথমে দাবি করে যে, জঙ্গিরাই এ সব করছে। পরে যদিও তাঁর আত্মজীবনী ‘ইন দ্য লাইফ অব ফায়ার’-এ পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ় মুশারফ স্বীকার করেছিলেন, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ছিল পাক সেনাও। আর তার পরিনাম ভোগ করতে হয়েছিল পাকিস্তানকে।
হিসাবটা ভুল ছিল মুসারফের। তাঁর ধারণা ছিল দুই পরমাণু শক্তি সম্পন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধলে আন্তর্জাতিক মহল তাতে হস্তক্ষেপ করলে ওরা কাশ্মীর ফিরে পাবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলকে কিছু করতে হয়নি। তার আগেই পাক সেনাবাহিনীকে শায়েস্তা করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই বিজয় ঘোষণা করে ভারত। ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ই পরমাণু অস্ত্রধর দেশ হলেও কার্গিল যুদ্ধ লড়েছিল পরমাণু অস্ত্র ছাড়া। উভয় পক্ষই প্রায় সব ধরনের প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করেছিল সেই যুদ্ধে। তবে গোপন সূত্রের খবর, পরমাণু অস্ত্র সম্পূর্ণ রেডি রেখেছিল দুই দেশ।
সেই যুদ্ধে ভারতের প্লাস পয়েন্ট ছিল ভারত বিপুল বিমান বাহিনী নিয়োগ করেছিল। বিমান বাহিনীর আক্রমনে পাকিস্তানী সেনা গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান যেহেতু সেই যুদ্ধে তাদের উপস্থিতি অস্বীকার করেছিল, তাই বিমান বাহিনী নিয়োগ করতে পারেন। সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে ভারতের জয়ের অন্যতন কান্ডারি ছিল বহু বিতর্কিত বোফর্স কামানা ।
তবে আন্তর্জাতিক সূত্রের খবর, ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে পাকিস্তান অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় গুপ্তচর বাহিনীর খবর ছিল,কার্গিল যুদ্ধে ভারতের উপর পরমাণু হামলা চালাতে বদ্ধপরিকর পাকিস্তান। সেই সময় পাকিস্তানের একটি প্রতিবেদনা জানানো হয়েছিল, “যুদ্ধে জিততে অস্ত্রাগারে থাকা যে কোনও অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান।’’ কিন্তু সতর্ক করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। যখন আমেরিকার গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসে যে, পাকিস্তান তার পরমাণু অস্ত্রগুলি ভারত সীমান্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর পরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন নাকি নওয়াজ়কে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন বলে জানা গিয়েছিল। তারপরে তো ভারতের বিজয় উৎসব।