বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির আয়োজনে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া আলোচনা সভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে দিদি বলা বন্ধ করতে হবে। কারণ তিনি আন্টি হয়ে গিয়েছেন।
তিনি আরও বলেছেন, বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে তাঁকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) পরাজিত করেছেন। তারপর থেকে তাঁর (শুভেন্দু অধিকারী) বিরুদ্ধে ৪২ টি মামলা করেছেন। উল্লেখ্য যে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রায় উনশশো ভোটে পরাজিত করেছিলেন। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর থেকে উপনির্বাচনে জয়ী হন।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্দেশখালি নিয়ে বলতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সন্দেশখালি পুড়ছে। সেখানে মহিলারা নৃশংসতার সম্মুখীন হচ্ছেন। রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে দুর্নীতিবাজ বলেও নিশানা করেন বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, পশ্চিমবঙ্গের এই অবস্থার শুরু বামপন্থীদের শাসনের সময় থেকে। তারপর তৃণমূলের শাসন। সবাই মিলে পশ্চিমবঙ্গকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। বিরোধী দলনেতা পশ্চিমবঙ্গের ঘটনার সঙ্গে ইজরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘর্ষের তুলনা করেছেন।
সন্দেশখালির ঘটনা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রীর আসন থেকে সরাবে বলেও মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেছেন, সন্দেশখালি মমতা কি কুরসি করেগি খালি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি উত্তর কোরিয়ার কিম জন উনের মিনি সংস্করণ বলেও উল্লেখ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা স্লোগান দেন, তাও বাংলাদেশের বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শুভেন্দ অধিকারী ভবিষ্যতে বাংলায় ডাবল ইঞ্জিন সরকার তৈরির ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন।
শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করবে না, কারণ সে ভোট নিয়ন্ত্রণ করে। যদি তাকে গ্রেফতার করা হয়, তাহলে তৃণমূল বসিরহাট আসন হারাবে। তিনি বলেছেন, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ছয় মার্চ শুনানি রয়েছে। তারা আশা করছেন, মামলাটি সিবিআই-এর কাছে যাবে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হবে। তিনি অভিযোগ করেছেন, সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, শুধুমাত্র বিজেপি নেতাদের আটকাতে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনি বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেশ বিরোধীদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সন্দেশখালি সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, শেখ শাহজাহান জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ। পুলিশ জানে সে কোথায় রয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, ইজরায়েল-ফিলিস্তিনে কিছু ঘটলে প্রতিবাদ করারা সন্দেশখালি নিয়ে চুপ করে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত দিল্লি যাত্রার আগে বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেও অধরা শেখ শাহজাহান। এই ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ধরবে না। ভোট আসবে আর কালীঘাটে টাকা সাপ্লাই করবে।’ সন্দেশখালি কি দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম হতে চলেছে? প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন ‘হ্যাঁ। সেখানে বশ্যতার বিরোধী সংগ্রাম চলছে। নন্দীগ্রাম শুরু হয়েছিল জমি অধিগ্রহণ দিয়ে। সন্দেশখালি শুরু হয়েছে মেয়েদের ওপর অত্যাচার দিয়ে। তার সঙ্গে রয়েছে জমি দখল।