বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরে বুধবার পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্ত থেকে দিল্লি চলোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন কৃষকরা। এদিকে ব্যারিকেড ভেঙে দেওয়ায় হরিয়ানা পুলিশের তরফে পঞ্জাব পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই মুহূর্তে প্রায় চোদ্দো হাজার কৃষক হরিয়ানা সীমানায় সমবেত হয়েছেন। সেখানে হাজারের বেশি ট্রাক্টর, প্রায় তিনশো গাড়ি এবং বেশ কিছু মিনিবাসও রয়েছে।
এদিকে দিল্লি পুলিশ সতর্ক রয়েছে। জাতীয় রাজধানীতে কৃষকদের প্রবেশের পয়েন্টগুলিকে সুরক্ষিত করতে মহড়া চালাচ্ছে তারা। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তঃরাজ্য সীমানা বন্ধ রয়েছে। এদিকে প্রতিবাদ ফের শুরু করার আগে কিষাণ মজদুর মোর্চার নেতা সারওয়ান সিং পান্ধে জানিয়েছেন, কৃষকরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, কৃষকদের তরফে ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে এবং বিনা বাধায় দিল্লি যাওয়ার অনুমতি দিতে আবেদন করা হবে।
সারওয়ান সিং পান্ধে আরও জানিয়েছেন, তাদের দিক থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। বৈঠকে অংশ নিয়ে প্রতিটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেছেন, ফসলের এমএসপি নিয়ে আইন করতে কেন্দ্রে উচিত একদিনব্যাপী সংসদের অধিবেশন ডাকা। তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা থাকলে সংসদের অধিবেশন ডাকা যেতেই পারে। সেখানে কোনও বিরোধী দল বিরোধিতা করবে না।
পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তের শম্ভুতে প্রায় চোদ্দো হাজার কৃষক সমবেত হয়েছেন। সেখানে হাজারের বেশি ট্রাক্টর, তিনশোর বেশি গাড়ি এবং মিনিবাস রয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অনুমান করছে, পাঁচশোর বেশি ট্রাক্টর-সহ সাড়ে চার হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ধাবি-গুজরান সীমানায় জড়ো হয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে পঞ্জাব সরকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনিত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, এরা কৃষক হিসেবে দাবি করা দুর্বৃত্ত। সেখানে আরও বলা হয়েছে, এরাই পাথ ছুঁড়েছে। বুলডোজার এবং আর্থ মুভারের মতো ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে হরিয়ানর শম্ভু সীমানায় জড়ো হয়েছে।
কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, শম্ভু সীমানায় থাকা কৃষকরা যে বুলডোজার ও অন্য সরঞ্জাম এনেছে, সেগুলি পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার জন্য আনা হয়েছে। এই মেশিনগুলি পুলিশের ব্যারিকেডকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং সেখানে থাকা পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে। হরিয়ানার নিরাপত্তা পরিস্থিতির সঙ্গে আপস করা হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের তরফে বলা হয়েছে রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে দিল্লির তিন সীমানার আশপাশের এলাকাগুলি যানজটের সাক্ষী হতে পারে। এই তিন সীমানায় প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি কংক্রিটের একাধিক স্তর দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে, সেখানে দেওয়া হয়েছে লোহার পেরেকও। এদিন প্রয়োজনে গাজিপুর সীমানাও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট পঞ্জাব সরকারকে কৃষকদের বেশি সংখ্যায় জমায়েতের অনুমতি না দিতে পঞ্জাব সরকারকে বলেছে।