বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:সামনেই লোকসভা ভোটের তৃতীয় দফা। তারই মধ্যে দলের পদ থেকে অপসারণের পরে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই দলের কাছে এব্যাপারে খবর ছিল।

তিনি যে ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করেছিলেন, তা অন্য কেউ করেন কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। তবে সঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন তাঁর নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেই দলেই সৈনিক মাত্র।

আর এদিন দুপুরে বেকবাগানে ব্রাত্য বসুর মধ্যস্থতায় ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে বৈঠকের পর বেরিয়ে কুণাল ঘোষ গাইলেন আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আপাতত বিদ্রোহে ইতি। তৃণমূলেই ফের আরও একটা কামব্যাক হতে চলেছে তাঁর।

ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে বৈঠকের পর বেরিয়ে কুণাল ঘোষ কিংবা মধ্যস্থতাকারী ব্রাত্য বসু কেউই বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলেছেন, দেখতে থাকুন কী হয়। তবে কুণাল ঘোষ বলেছেন, বেশ কিছু জায়গা থেকে প্রচারের আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। বৈঠক থেকে বেরনোর পরে তাঁকে খুশি-খুশিই দেখিয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, সংঘাত মিটে গিয়েছে। এবার ঐক্যের ছবিই সামনে আসতে চলেছে।

তবে এদিন কোন শর্তে আলোচনা হল, আদৌ কোনও শর্ত ছিল না সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। কুণাল ঘোষকে ফের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে কিনা তাও জানা যায়নি। ডেরেক ও’ব্রায়েনের বাড়ি থেকে বেরিয়েও এব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি কুণাল ঘোষ।

তবে এদিন দুপুরের বৈঠকের আগেই কোথাও যেন বরফ গলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ছবি পোস্ট করে তিনি বলেন, তথনও তৃণমূল ক্ষমতায় আসেনি। একটা সুন্দর মুহূর্ত। প্রসঙ্গত গত কয়েকদিনে কুণাল ঘোষ বারে বারে বলেছেন ১৯৯৩ সালে ধর্মতলায় তৃণমূলের কর্মসূচিতে যখন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় এবং পুলিশের সঙ্গে কার্যত যুদ্ধ হয় তৃণমূল কর্মীদের সেই সময় আহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের গাড়িতে সরিযে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনিই।

গত বুধবার উত্তর কলকাতায় এক রক্তদান শিবিরে উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের সঙ্গে হাজির হন তিনি। সেখানে তাপস রায়ের প্রশংসা করে কুণাল ঘোষ বলেন, তাপসদা ভাল জনপ্রতিনিধি। সেই অনুষ্ঠানে কুণাল ঘোষ আরও বলেন, এখানে যেন কোনও ছাপ্পা ভোট না হয়।
তারপরেই সেদিন দুপুরে ডেরেক ও’ব্রায়েনের স্বাক্ষর করা প্রেস বিবৃতি সামনে আসে। সেখানে বলা হয় কুণাল ঘোষ যা বলেছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। তাঁকে দলের রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। তারপরেই কুণাল ঘোষ ডেরেক ও’ব্রায়েনের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তারপরেই তাঁর মুখে আগে এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গ।

এত কিছুর পরেও বৃহস্পতিবার থেকে তৃণমূলের একটা মহল থেকে বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা শুরু হয়। সেই সময় ব্রাত্য বসুকেও কুণাল ঘোষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়। এরপর শুক্রবার ব্রাত্য বসুই কুণাল ঘোষকে ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে বৈঠকে রাজি করান বলে জানা গিয়েছে। তারপরে শনিবার দুপুরে বৈঠক হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *