বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:সন্দেশখালি কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। সিবিআইয়ের তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে, রিপোর্ট দেখে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, রাজ্যের কাছে যদি কোন নথি চায়, তাহলে তা এক সপ্তাহের মধ্যে সিবিআইকে দিতে হবে।
আদালতের নির্দেশ তদন্তে অগ্রগতি সংক্রান্ত পরবর্তী রিপোর্ট জমা দিতে হবে ১৩ জুন। এছাড়াও এদিন আদালতের তরফে এই মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে যুক্ত হওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
জমির রেকর্ড নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে কিছু অসহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে সিবিআই রিপোর্টে। আদালত আশা করে, এব্যাপারে রাজ্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে। যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের কোনও স্থগিতাদেশ নেই, তাই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ যথাযথ ভাবে মানতে হবে, জানিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
একই সঙ্গে, রাজ্যের ভূমিকায় প্রশ্ন আদালতের। সিসিটিভি এবং এলইডি লাগানো হয়েছে কিনা তা নিয়ে কোনও রিপোর্ট দেয়নি রাজ্য। তাহলে এটা ধরে নিতে হবে যে রাজ্য এই নির্দেশ পালন করেনি। এবং রাজ্য যদি এটা না করে তাহলে কলকাতা হাইকোর্ট আদালত অবমাননার অভিযোগে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পারে, হুঁশিয়ারি প্রধান বিচারপতির। যত দ্রুত সম্ভব সিসিটিভি এবং এলইডি আলো লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে, নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এদিন সন্দেশখালির বাসিন্দাদের তরফে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল সওয়ালে বলেন, ধর্ষনের ঘটনায় যেন সিবিআইয়ের কাছে কোন এফআইআর দায়ের করা না হয়, এই বলে মহিলাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সেই সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, মানুষের মনে আস্থা বাড়ানোর জন্য সিবিআইকে পদক্ষেপ করতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে সিবিআইকে। প্রধান বিচারপতি আরও বলেছেন, মহিলাদের ভয় দূর করার জন্য প্রয়োজন হলে মহিলা আধিকারিক নিযুক্ত করবে সিবিআই।
বুধবারেও সন্দেশখালিতে যায় সিবিআই-এর একটি দল। তারা সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজুদ্দিনের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও সাড়া মেলেনি। এরপর সিরাজের তালাবন্ধ বাড়ির সামনে নোটিস সেঁটে দেন সিবিআই আধিকারিকর। সূত্রের খবর তেসরা মে শুক্রবার শেখ সিরাজকে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরের হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিন কয়েক আগে সিবিআই আধিকারিকরা সন্দেশখালিতে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিলেন। সেদিন এলাকায় শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, টোটোচালক আবু তালেব মোল্লার বাড়িতে হানা দিয়ে বেশ কিছু দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করে সিবিআই-এনএসজি।
২০২৪-এর মার্চের পাঁচ তারিখে সন্দেশখালির ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরবর্তী সময়ে সন্দেশখালির সব মামলায় সিবিআই তদন্তে র নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এর মধ্যে রয়েছে জোর করে টাকা আদায়, জমি দখল এবং যৌন নির্যাতনের মতো অভিযোগও। হাইকোর্টের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।