বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক : ২০১৬ সালের এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, এতকাল যাবত যে মাইনে শিক্ষক শিক্ষিকারা পেয়েছেন। তাও ফেরত দিতে হবে।
টাকা ফেরতের সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার সকালের এই রায় রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতরকে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন। নবম দশম একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির গ্রুপ সি ও ডির পুরো প্যানেল বাতিল করা হল। এসএসসির সমস্ত নিয়োগ বাতিল করলেন দুই বিচারপতি। প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকাকে চাকরি হারাতে হল৷
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক পথে হয়নি। এই কথা বলা হচ্ছে। যাদের চাকরি গেল তাদের মাইনেও ফেরত দিতে হবে। ২০১৬ সালের প্যানেল নিয়োগ হয়েছিল। ২০১৯ সালের সময় থেকে এরপর বিভিন্ন সময় শিক্ষক শিক্ষিকারা চাকরি পেয়েছেন। সেই থেকে মোট যে বেতন তারা পেয়েছেন, এবার সব টাকাই ফেরত দিতে হবে সরকারের ঘরে।
বিরোধীদের একটা অংশের দাবি ছিল, টাকা দিয়ে শিক্ষকের চাকরি কেনাবেচা হয়েছে। মোটা টাকায় এই চাকরি বিক্রি হয়েছে। সেই টাকা জোগাড় করতে গিয়ে বহু পরিবারকে জমি বাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল। এবার সেইসব পরিবারের কী হবে? বেতনের টাকা চার সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ ফেরত দিতে হবে।
অর্থাৎ হাতে এক মাস সময়। তার মধ্যে সমস্ত টাকা সরকারের কাছে জমা দিতে হবে। স্থানীয় ডিআই এই বিষয়টি দেখবে। ছয় সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা এসেছে কী না, সেই বিষয়ে ডিআই তথ্য পাঠাবে। এমন নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আজ দিয়েছে।
সাম্প্রতিক বেশ কয়েক বছর ধরেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা রাজ্যের সব থেকে বেশি চর্চিত বিষয়। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলা শুরু হয়েছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়েছে। টেট মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এসএসসি মামলা কলকাতা হাইকোর্টে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই মামলার আজ রায় বেরলো।
ভোটের বাজারে এই ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, রাজ্য সরকার বরাবর চাকরি যাওয়ার বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করে সকলকে চাকরিতে রাখার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করা যাবে না। কারণ, সেই বিষয়টিও কলকাতা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।