বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
ঠিক কত কোটির দুর্নীতি হয়েছে রেশনে? তদন্তে নেমে ইডির হিসেব ক্রমেই লাগামছাড়া হয়ে যাচ্ছেন। প্রথমে এই দুর্নীতি একশো বা দুশো কোটির মনে হলেও, এদিন আদালতে ইডির আইনজীবী দাবি করেছেন, এই দুর্নীতি দশ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে দু’হাজার কোটি টাকা দুবাইয়ে পাচার হয়ে গিয়েছে। সীমান্ত এলাকায় দরিদ্র মানুষের নামে মুদ্রার লেনদেন হতো বলে দাবি করেছেন ইডির আইনজীবী।
এদিন আদালতে শঙ্কর আঢ্যর জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী বলেন, এটা শুধু কোটি কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি নয়, এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তাও জড়িত। বিভিন্ন দেশে এই দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে রয়েছে। তাই এই শঙ্করের হেফাজতের প্রয়োজন। নেপথ্যে অন্য পান্ডা রয়েছে বলে দাবি করেন ইডির আইনজীবী।
ইডির আইনজীবী বলেছেন, এর একাধিক বিদেশি মুদ্রা এক্সচেঞ্জের কোম্পানি আছে বিভিন্ন জায়গায়। অন্তত ৯০ টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার হদিশ পাওয়া গিয়েছে শঙ্কর আঢ্যের সঙ্গে যুক্ত। ওই সব সংস্থার মাধ্যমেই ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে। পাচার হওয়া নয় থেকে দশ হাজার কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হতে পারে বলেও জানিয়েছে ইডি। পাশাপাশি ইডির তরফে বলা হয়েছে, বাংলা গরিব নয়, এই দুর্নীতিতে বাংলার মানুষকে গরিব করা হয়েছে।
ইডির দাবি, এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে শঙ্কর আঢ্যের নাম পাওয়া গিয়েছে। হাসপাতালের কেবিন থেকে সিসিটিভি তুলে নেওয়ার পরে মেয়ে দেখা করতে যান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে। , হাসপাতালে থাকাকালীন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের লেখা একটি চিঠি সিআরপিএফ-এর হাতে এসে পড়ে। সেই চিঠিতে শঙ্কর আঢ্যর নাম উল্লেখ ছিল বলে দাবি করে ইডি।
প্রসঙ্গত শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেফতারের সময় ইডির আধিকারিক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠির কথা বলেন বলে দাবি শঙ্কর আঢ্যের পরিবারের। ইডির আইনজীবী এদিন দাবি করেছেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকুর। রেশন দুর্নীতির টাকা শঙ্কর এর সাহায্যেই বিদেশি মুদ্রায় কনভার্ট করা হত।
এদিন ইডির আইনজীবী বনগাঁর প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের আবেদন করেন। আদালতে শুনানি চলাকালীন শঙ্কর আঢ্যের ছেলে কথা বলার চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ হন বিচারক। দ্বিতীয়বার আর সুযোগ দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারকি দিয়ে তিনি বলেছেন, কেউ কমিউনিকেশন করলে কাস্টডিতে নেওয়া হবে।
এর আগে বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতারের পরে ইডি জানিয়েছিল ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। পরে তা বেড়ে ১০০, পরে তা আরও বেড়ে ১০০০ কোটি হয়। আর শনিবার এই অঙ্ক বেড়ে ১০ হাজার কোটি ছাড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন ইডির আইনজীবী।