লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ইন্ডিয়া জোটের অস্তিত্ব বলে কিছু থাকছে না। সিপিআইএমকে প্রাধান্য দিচ্ছে কংগ্রেস, এমন দাবি প্রথমে করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপর তৃণমূল কংগ্রেস ৪২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেসের জন্য অনন্ত অপেক্ষা না করে আজ বামেরা ১৬টি আসনে প্রার্থী দিল। আইএসএফের সঙ্গে আবার দূরত্ব বাড়ছে।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জোর গলায় দাবি করলেন, জোট বলে কিছু না। আসন সমঝোতা। কংগ্রেস যদি বাস্তবসম্মত প্রস্তাব নিয়ে আসে তাহলে আসন সমঝোতার রাস্তা খোলা। কংগ্রেস তফাত যাও- এমনটা বামফ্রন্ট বলেনি। তবে বিমান বসু আইএসএফের ভূমিকায় খুব একটা সন্তুষ্ট নয়।
ভাঙড় বিধানসভার কথা বলে যাদবপুরে লড়তে চেয়েছে আইএসএফ। একইসঙ্গে জানানো হয়েছিল, যাদবপুরে বিকাশ ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা হলে সেটা ছাড়তে তারা রাজি। কিন্তু সেখানে দাঁড় করানো হয়েছে নতুন মুখ সৃজন ভট্টাচার্য। বিমান বসু বলেন, এটা ভাঙড়ের ভোট না, যাদবপুর লোকসভার ভোট। ওখানে আরও ৬টি বিধানসভা ক্ষেত্র আছে।
রাজনৈতিক মহলের অভিমত, এই পরিস্থিতিতে যাদবপুরে অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল কংগ্রেস। বামেদের তালিকায় আবার ডায়মন্ড হারবার নেই। সেটা আইএসএফের জন্য ছেড়ে রাখা হলো কিনা সে প্রশ্নের জবাবে বিমান বসু বলেন, না। অর্থাৎ সেই আসনটিও আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকির পাওয়ার সম্ভাবনা কম। যদিও বিমান বলেন, আমি জানি না ওটা আইএসএফ চেয়েছে বলে।
বিমান বসু যখম আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠক করছেন, তখন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী দিল্লিতে। অধীর বলেন, আসন সমঝোতার পথ খোলা আছে। মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে একবার কথা হয়েছিল। তবে তারপর আর কথা হয়নি। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকের পর ২-৩ দিনের মধ্যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে কংগ্রেস।
বিমান বসু বলেন, বামেদের বৈঠক রয়েছে শনিবার। তার আগে কংগ্রেস তাদের প্রস্তাব নিয়ে এলে আলোচনা হতেই পারে। অধীর বললেন, বামেরা মনে করেছে যে আসনগুলিতে তারা বিজেপি, তৃণমূলকে হারাতে পারবে, সেইমতো প্রার্থী দিয়েছে। তেমন ধারণা সঠিক হলে সেখানে আমরা প্রার্থী নাও দিতে পারি।
প্রথমে ২০ জন প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল ১২। বামেরা ১৪ নতুন মুখ-সহ ১৬। কংগ্রেস অন্য রাজ্যে ঘোষণা করলেও বাংলায় এখনও প্রার্থী দেয়নি। প্রথমে তৃণমূলের দিকে তাকিয়ে ছিল। এখন বামেরাও চাপে রাখল। যদিও প্রার্থী ঘোষণায় দেরি হলেও শেষ ল্যাপে বাজিমাত করবেন বলে আশাবাদী অধীর। কিন্তু মূল বিষয় হলো, বাংলায় বিরোধী ভোট ভাগ হচ্ছেই। আর তাতে কোথাও বিজেপি, কোথাও তৃণমূলের হাসি চওড়া হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।