বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: মধ্যযুগের প্রায় সমস্ত সাহিত্য ঈশ্বর নির্ভর। তার মধ্যে অন্যতম বৈষ্ণব পদাবলী, শাক্ত পদাবলী, মঙ্গলকাব্য ইত্যাদি। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দী হতে শুরু করে অষ্টাদশ শতাব্দীর কবি ভারতচন্দ্রের কাল পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে যে এক শ্রেণীর ধর্মবিষয়ক আখ্যান কাব্য প্রচলিত ছিল সেটাই মঙ্গলকাব্য।

 

বাংলার মানুষ তার নিজ নিজ সমস্যা সমাধান উপলক্ষে বিভিন্ন দেব দেবীর স্তুতিমূলক কাব্য পাঠ করত। যে কাব্য পাঠে মঙ্গল বয়ে আনে সেটাই মঙ্গলকাব্য। প্রত্যেক মঙ্গলকাব্যের নায়কই স্বর্গভ্রষ্ট দেবশিশু। বিশেষ কোন দেবতার পূজা প্রচারের উদ্দেশ্যেই মর্ত্যলোকে জন্মগ্রহণ করার জন্য শাপগ্রস্ত হয়। তারপর স্পৃশ্য অস্পৃশ্য নির্বিচারে যে কোন মানবীয় গর্ভে জন্ম নিয়ে মর্ত্যের মাটিতে বিশেষ কোন দেবপূজা প্রচারে সচেষ্ট থাকে। পূজা প্রতিষ্ঠার পর শাপমুক্ত হয়ে স্বর্গারোহণ করে।

কমবেশি প্রায় সমস্ত মঙ্গলকব্যে যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকে, তা হলো –
১। এ কাব্যের আখ্যানভাগ নায়কের সাথে দেব-দেবীর দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে বিপুলায়তন পায়।

২। সৃষ্টিকথা বর্ণনা প্রসঙ্গে কাব্যলক্ষ্মীর বন্দনা করা হয়। কবি সাধারণত স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে কাব্য রচনায় আত্মনিয়োগ করে।

৩। দেবতা মর্ত্যলোকে পূজা পেতে চেষ্টা করে।

৪। এতে সুখ-দুঃখের বারমাসী গান, চৌতিশা, স্তুতি, নারীর পতি নিন্দার বর্ণনা, রন্ধনশিল্প বর্ণনা, ফলফুল, পশুপাখির আলোচনা প্রভৃতির অবতারণা করা হয় ।

৫। এ কাব্যের ছন্দ সাধারণত পয়ার ও ত্রিপদী।

৬। সমকালীন ধর্ম, রাষ্ট্র ও সমাজচিত্র অঙ্কিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *