বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: কথায় আছে মেয়েরা অবাঞ্ছিত? একেবারেই ভুল কথা , তা না হলে চার পুত্রসন্তান থাকার পরেও শুধুমাত্র কন্যাসন্তানেরই টানে এক দম্পতি সুদূর নিউজিল্যান্ড থেকে কোচবিহারে ছুটে এলেন কিভাবে?সরকারি সমস্ত নিয়মবিধি মেনে মঙ্গলবার কোচবিহারের বাবুরহাট এলাকায় মেয়েদের সরকারি হোম শহিদ বন্দনা থেকে এক আবাসিক তথা কন্যাসন্তানকে নিয়ে তাঁরা নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হবেন। সোমবার ওই দম্পতি শহিদ বন্দনায় এসে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলার পাশাপাশি ‘নতুন’ কন্যার সঙ্গেও কথা বলেন।
গোটা বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট হোমটিতে ব্যাপক খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে। হোমের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অর্পিতা পাইন বলেন, ‘সমস্ত সরকারি নিয়ম মেনে ওই দম্পতি মঙ্গলবার বাচ্চাটিকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডে রওনা হবেন। হোমের আবাসিকরা এমন পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেলে খুবই ভালো লাগে। আমরা খুবই খুশি।’ প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে এই হোম থেকে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী ইতালি গিয়েছে। সেবারও বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এমনই খুশির হাওয়া ছড়িয়েছিল।
হোম সূত্রে খবর, যে আবাসিকের নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে সে কোচবিহারের সিস্টার নিবেদিতার স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। তারা সাত ভাইবোন। কোচবিহারের বাসিন্দা দিন-আনি দিন-খাই পরিবারটির স্বামী-স্ত্রী এক বিশেষ অসুখে ২০২০ সালে মারা যান। এতে সাত ভাইবোন অথই জলে পড়ে। তবে পাঁচ বোনের মধ্যে দুই বোনের দায়িত্ব তাঁদের পরিজনেরা নেন। শহিদ বন্দনা হোমে বাকি তিন বোনের ঠাঁই হয়। দুই ভাই জলপাইগুড়ির কোরক হোমে রয়েছে। শহিদ বন্দনা হোমে থাকা তিন বোনের মধ্যে ছোটটিই নিউজিল্যান্ডে যাচ্ছে।
প্রশাসনিক সমস্ত নিয়ম মেনে তাকে নিতে ‘নতুন বাবা-মা’ জোসেফ রাজারাম রাও ও নাতাশা রাও ইতিমধ্যে শহিদ বন্দনা হোমে চলে এসেছেন। নিয়ম মেনে অনেকদিন ধরেই প্রতি সপ্তাহে মেয়েটির সঙ্গে অনলাইনে তার নতুন বাবা-মায়ের সাক্ষাৎ করানো হত। সোমবার ওই দম্পতি কোচবিহারে এসে তাঁদের মেয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে খুব খুশি হয়েছেন। ওই নাবালিকাও নতুন বাবা-মাকে পেয়ে খুবই খুশি। ওই দম্পতি নাবালিকার স্কুলেও যাবেন বলে খবর।
চার পুত্রসন্তান থাকার পরেও কেন একটি মেয়েকে দত্তক নেওয়ার জন্য এত দূর থেকে কোচবিহারে এলেন? জোসেফ–নাতাশার কথায়, ‘চার ছেলে থাকলেও আমাদের কোনও মেয়ে ছিল না। শুধু মেয়ের টানের কারণেই না এর পিছনে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে জানালেন তারা। আমাদের ইচ্ছে পূরণ হল জানালেন তারা।