বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়া তরুণীকে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে রাজ্য জুড়ে মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

 

এই আবহে প্রতিটি জেলায় মহিলাদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে মহিলা পরিচালিত টহলদারি ভ্যান চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘পিঙ্ক ভ্যান’। ইতিমধ্যে কোচবিহার ও হাওড়া-সহ একাধিক জেলার রাস্তায় নেমেছে এই টহলদারি ভ্যান।

এবার অপরাধ দমন করতে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে চালু হলো পিঙ্ক পুলিশ ফোর্স। মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা জুড়ে এর আগেও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বারাসাত জেলা পুলিশ। বারাসাত পুলিশ জেলার অন্তর্গত সমস্ত এলাকায় ইভটিজিং এর অপরাধ দমন এবং মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আজ থেকে শুরু হলো পিঙ্ক পুলিশ ফোর্স। মহিলা পুলিশ কর্মীদের দ্বারা এই পিঙ্ক পুলিশ ফোর্স পরিচালনা করা হবে এমনটাই জানিয়েছেন বারাসাত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার। শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এই পিঙ্ক পুলিশ ফোর্স এর শুভ উদ্বোধন করেন বারাসাত পুলিস জেলার পুলিশ সুপার , সাথে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার,SDPO এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বারাসাত পুলিশ জেলার একাধিক পুলিশ আধিকারিক।

পুলিশ সূত্রের খবর, এই টহলদারি ভ্যানের প্রত্যেক পুলিশকর্মীই মহিলা। চার জন মহিলা পুলিশকর্মীর থাকার কথা এক-একটি ভ্যানে। যাঁদের মধ্যে এক জন অফিসার এবং বাকিরা কনস্টেবল। ভ্যান চালাবেনও মহিলারা। কোথাও কোনও মহিলা সমস্যায় পড়েছেন, এমন খবর এলে ওই ভ্যান সেখানে পৌঁছে যাবে।

গোলাপি রঙের এই ভ্যানগুলির আপাতত জেলা সদরে টহলদারি চালানোর কথা থাকলেও পরে জেলার অন্যত্রও তা মোতায়েন করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সমস্যায় পড়ে কোনও মহিলা ১০০ বা ১১২ নম্বরে ফোন করলেই এই ভ্যান সেখানে চলে যাবে। এ ছাড়া, মহিলাদের কোনও অভাব-অভিযোগ থাকলে প্রথমে নিকটবর্তী থানার পুলিশকর্মীরা তা খতিয়ে দেখবেন। পরে প্রয়োজন পড়লে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে পিঙ্ক টহলদারি ভ্যান।

রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘আপাতত জেলাগুলিকে একটি করে পিঙ্ক টহলদারি ভ্যান রাস্তায় নামাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এই সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। কিছু জেলা এবং কমিশনারেটে একাধিক পিঙ্ক টহলদারি ভ্যান নামানো হয়েছে।’’ উল্লেখ্য, কলকাতা পুলিশে মহিলা পরিচালিত টহলদারি ভ্যান অনেক বছর ধরেই আছে। যা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় মোতায়েন থাকে।

 

প্রসঙ্গত, এর আগে মেয়েদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই তাঁদের নিয়ে উইনার্স বাহিনী চালু করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে প্রায় একশো জনকে নিয়ে উইনার্স বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল প্রতিটি জেলায়। পুলিশের একটি বড় অংশের দাবি, মহিলাদের নিয়ে গঠিত উইনার্স বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় মোটরবাইকে টহল দেওয়ার ফলে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার মতো ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অপরাধও নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।

এক পুলিশকর্তা জানান, বাইকে চড়ে উইনার্স দল বিভিন্ন জায়গায় এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে নিয়মিত নজরদারি চালায়। আর মহিলাদের নিয়ে গঠিত পিঙ্ক টহলদারি ভ্যানেরও মূল লক্ষ্য হবে, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমন করা, মহিলাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা এবং রাস্তাঘাটে তাঁদের সাহায্য করা। চলতি সপ্তাহ থেকেই এই টহলদারি ভ্যান রাস্তায় নেমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *