বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় সরিয়ে দেওয়া হল আরজি কর হাসপাতালের সুপারকে। সঞ্জয় বশিষ্ঠ ছিলেন সুপার। তাঁর জায়গায় বসানো হয়েছে বুলবুল মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু তাতে খুশি নয় হাসপাতালের আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা অভিযোগ করেছেন কেন হাসপাতালের প্রিন্সিপালকে সরানো হল না।

কারণ তিনিই আসল দোষী। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের এই অবস্থার কথা জানিয়েও কেন কেন তিনি আগে থেকে সতর্ক হননি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আরজিকর হাসপাতালের সুপারের বিরুদ্ধে আগেও একাধিকবার আন্দোলন করেছে জুনিয়র ডাক্তার এবং ডাক্তারি পড়ুয়ারা। এই ঘটনার পরেও কেন তাঁকে সরানো হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।

কী করে হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সেমিনার হলে মধ্যরাতে একজন বহিরাগত ঢুকতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে নির্মমভাবে গলা টিপে খুন করে ধর্ষণ করে এক সিভিক ভলেন্টিয়ার যার কোনও ডিউটি ছিল না হাসপাতালে। সে এই কীর্তি করেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর দেহ পড়েছিল সেমিনার হলের মধ্যে। সকালে অন্য চিকিৎসকরা গিয়ে দেহ উদ্ধার করে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এমনকী নির্যাতিতার বাবা-মাকেও বলা হয়েছিল তাঁদের মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। তারপরে তাঁর বাবা অভিযোগ করেন তাঁদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তারপরেই একের পর এক ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। নির্যাতিতাকে। কলকাতা পুলিশ ক মিশনার বিনীত গোয়েল তড়িঘড়ি ছুটে গিয়েছিলেন সেখানে। তারপরে সেখানে পৌঁছে যায় ফরেন্সিক টিমও।

ফরেন্সিক টিম পরীক্ষা করে এসে জানায় ধর্ষণের ইঙ্গিত রয়েছে। দেহ আটকে বিক্ষোভ শুরু করে দিয়েছিল পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা। ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে ময়নাতদন্ত দাবি করেছিল তারা। সেই সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তও দাবি করেছিল পড়ুয়ারা। তাঁদের সব দাবি মেনে নিয়েই আরজিকর হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত হয়। তাতে ধর্ষণের প্রমাণ এবং খুনের প্রমাণ মিলেছিল।

ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করে। তাঁকে সেমিনার রুমের ভেতরে রাত আড়াইটে নাগাদ প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছিল। সেই সঙ্গে যে ইয়ারফোন পরে অভিযুক্ত সেমিনার রুমের ভেতরে প্রবেশ করেছিল সেই ইয়ারফোনটি পাওয়া গিয়েছিল তরুণীর দেহের পাশে। পুলিশের জেরায় ধর্ষণের কথা স্বীকারও করে নিয়েছে সঞ্জয় রায়।

কলকাতা পুলিশের প্রভাশালী সংগঠনের সঙ্গে যে যুক্ত ছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। এমনকী পুলিশের নিয়োগ না থাকা সত্ত্বেও উল্টোডাঙার পুলিশ ব্যারিকেডে থাকত সে। এমনকী তাঁর নামে পুলিশের বাইকও ইস্যু করা হয়েছিল। একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দোষীর ফাঁসির দাবি জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *