বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:ভূ-বিজ্ঞান আসলে অজস্র রহস্যে ঘেরা ইতিহাসের সমাহার। পৃথিবী প্রতি নিয়ত পরিবর্তীত হয়েই চলেছে। সেই পরিবর্তন খুব ধীরে হলে হয়তো মানুষ বুঝতে পারে না।
কিন্তু কোনো অতিপ্রাকৃতিক কারণে ঘটলে তা সহজেই চোখে পড়ে। কিন্তু আধুনিক সভ্যতার বহু আগে এমন অনেক অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা ঘটেছিল যা হয়তো মানুষের অজানা ছিল। তেমনই এক আশ্চর্য ঘটনার কথা সম্প্রতি সামনে আনলেন কয়েকজন বিখ্যাত মার্কিন ভূ-গবেষক। তাঁদের গবেষণার বিষয় ছিল গঙ্গা নদীর গতিপথ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে গঙ্গা বয়ে চলেছে আপন ছন্দে। গোমুখ থেকে উৎপন্ন জলরাশি তার গতিপথ ধরে বয়ে এসে বঙ্গোপসাগরে লীন হয়ে যায়। পুণ্যতোয়া গঙ্গার ছোঁয়ায় সিক্ত হয়ে একের পর এক নগরের গোড়াপত্তন হয়েছে। মানুষ বসবাস শুরু করেছে।
গবেষকেরা গঙ্গার পার ধরে হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ভূমিরূপ দেখতে দেখতে গেছেন। হঠাৎ অধুনা বাংলা দেশের পদ্মা নদীর ভূমিরূপ দেখে তাঁরা চমকে ওঠেন। তাঁদের ধারণা ওই পথে গঙ্গে খুব বেশি দিন যাচ্ছে না। ভূমিরূপ গবেষণা করে তাঁরা জানাচ্ছেন,বড়োজোর আড়াই হাজার বছর আগে ওই ভূমিরূপ তৈরী হয়েছে। অথচ গঙ্গার উৎপত্তি তার থেকে অন্তত কয়েক হাজার বছর আগে। তা কি করে সম্ভব?
এখানেই গবেষকেরা এনেছেন নতুন তত্ত্ব। গবেষকদের দাবি, আড়াই হাজার বছর আগে এক ভয়ংকর ভূমিকম্প হয়েছিল। যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল অধুনা বাংলাদেশ ভূখণ্ডে। সেই কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ থেকে ৮। যাকে তীব্র কম্পন হিসাবেই ধরা হয়। সেই কম্পনের জেরে সে সময় গঙ্গা বাংলাদেশের ওপর যেখান দিয়ে বইত সেখান থেকে সরে যায়। বদলে যায় গতিপথ। যেখান দিয়ে বইত সেখানে শুকনো জমি হয়ে যায়। আর যেখান দিয়ে বইত না, ভূমিকম্পের জেরে সেখান দিয়ে গঙ্গা বইতে শুরু করে। যা এখনও বয়ে চলেছে। তাহলে কি আবারও গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে? গবেষকেরা এটাও জানিয়েছেন, আড়াই হাজার বছর আগে যে ঘটনা ঘটেছিল তা এখনও ঘটতে পারে। ফের ভূমিকম্প বদলে দিতে পারে গঙ্গার গতিপথ। আর এই পরিবর্তন হবে গঙ্গার নিম্ন প্রবাহে। অর্থাৎ বেনারস থেকে বঙ্গোপসাগরের মধ্যে যে কোনো স্থানে।