বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: কলকাতা হাইকোর্টের নজিরবিহীন রায়ে বাতিল হয়ে গেল প্রায় ২৬ হাজার চাকরি। যার জেরে ভোটের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি বড় ধাক্কা খেল রাজ্যের তৃণমূল সরকার। প্রসঙ্গ ক্রমে উল্লেখ্য এই বাতিলের মধ্যে রয়েছে রাজ্য সরকারের সুপার নিউমেরিক পোস্টও।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আদালতে মামলা শুরু হয় ২০২১-এ। তারপর থেকেই তা বাংলার রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দেয়। এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
এই মামলায় প্রথমে হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে যায়। তবে ডিভিশন বেঞ্চে সেই নির্দেশ বহার থাকে। রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও সেই মামলা হাইকোর্টে ফেরত পাঠানো হয়। পরে কার্যত অভিজিৎ গাঙ্গুলির অবস্থানই বজায় রাখল হাইকোর্ট। ফলে সেই জায়গা থেকে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের তরফে বারে বারে চারটি ক্ষেত্রের মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের তদন্তের বিরোধিতা করেছে। পরে আদালতের নির্দেশ মেনে নিয়ে বাধ্য হয় রাজ্য সরকার। প্রথমে নিয়োগ দুর্নীতির কথা অস্বীকার করলেও, পরে কয়েকজনের জন্য সমগ্র প্রক্রিয়াকে দোষারোপ করা উচিত নয় বলেও মত প্রকাশ করে রাজ্য সরকার।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একে একে গ্রেফতার করা হয় তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, তৎকালীন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, এসএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে। গ্রেফতার হয় যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, কুন্তল ঘোষ।
শেয পর্যন্ত এদিন কলকাতা হাইকোর্ট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনকে নিয়োগপত্র বাতিল করে প্রায় ২৩ লক্ষ ওএমআর শিট পূনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশ দিতে গিয়ে হাইকোর্ট বলেছে, তাদের হাতে তিনটি বিকল্প ছিল। তার মধ্যে চাকরি বাতিলকেই ঠিক বলে মনে করেছে।
মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে সরকারি সিদ্ধান্তেই যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন,তাঁদেরকে চার সপ্তাহের মধ্যে টাকা ১২ শতাংশ সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে আর ছয় সপ্তাহের মধ্যে এব্যাপারে ডিআই ও জেলাশাসকদের রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এটাও একটা ধাক্কা রাজ্য সরকারের।
যে সংস্থাকে ওএমআর শিটের মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই সমস্থ্রা এক কর্তার গাজিয়াবাদের বাড়ি থেকে সিবিআই হার্ডডিস্ক উদ্ধার করে। সেখানে দেখা যায় এসএসসির কাছে থাকা ওএমআর শিটে যারা শূন্য কিংবা এক পেয়েছে, তাদের নম্বর মূল্যায়নকারী সংস্থার কাছে ৫০ কিংবা ৫৬। রাজ্য সরকারের আপত্তির পরেও আদালত হার্ড ডিস্ককে তদন্তের বৈধতা দিয়েছে। এদিও সরকারের কাছে বড় ধাক্কা।