বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে বিক্ষোভের শুরু! আর তা থেকে তৈরি হওয়া জনরোষ যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার ভয়াল নির্দশন বাংলাদেশে। দেশজুড়ে তৈরি হওয়া প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুজিব-কন্যা। প্রাণ হাতে করেই কার্যত দেশ ছাড়লেন।
আর এরপরেই আন্দোলনকারীদের হাতে চলে যায় শেখ হাসিনার বাসভবন ‘গণভবন’। ভাঙচুর থেকে লুঠ, কিছুই বাদ পড়ল না। শুধু গণভবনই নয়, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল মিউজিয়ামেও (Bangabandhu Memorial Museum)।
ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ তৈরি করা খুব একটা সহজ ছিল না। কিন্তু সেই কাজ করে দেখান শেখ মুজিবুর রহমান। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা লেখা কিংবা বলায় কখনও বর্ননা করা যায় না। আজও সে দেশের মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন। অনেকেই তাঁকে বাংলাদেশের ‘জাতির জনক’ও বলেন।
সেই শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুও ভেঙে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশে। এমনকি কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর ছবিতেও। ক্ষোভের আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলছে মুজিবরের বাসভবনও। যা আজ বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম নামে পরিচিত। রাজধানী ঢাকার ধাণমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন। সোমবার সকালেই সেই বাড়ির সামনে শুরু হয় বিক্ষোভ। বেলা বাড়তেই তা আরও তীব্র হয়। গেট ভেঙে মিউজিয়ামের ভিতরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
অবাধে শুরু হয় ভাঙচুর। মুজিবরের ছবি থেকে শুরু করে আসবাব কিছুই ছাড়েনি আন্দোলনকারীরা। শুধু তাই নয়, পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবার ব্যবহৃত সমস্ত জিনিস ওই মিউজিয়ামে রাখা ছিল। তাতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। কার্যত ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে গোটা ভবন। বলে রাখা প্রয়োজন, বাংলাদশের ইতিহাসে তো বটেই, বর্তমান সময়েও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম (Bangabandhu Memorial Museum) ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বহু মানুষ দেখতে যান। এমনকি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও সেই বাড়িতে গিয়ে মুজিবরের ছবিতে শ্রদ্ধা জানান। উল্লেখ্য, ১৯৭৫-এর ১৬ অগস্ট, স্ত্রী ও তিন পুত্র সহ মুজিবর রহমানকে হত্যা করা হয়। সেই সময় তিনি ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। ঘটনায় কোনও ভাবে বেঁচে যান শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা।
কোনও রকমে তাঁরা ভারতে চলে আসেন। এরপর দীর্ঘ ছয় বছর ভারতেই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা। দীর্ঘ দশক পর ফের একবার সেই ইতিহাসেরই পুনঃরাবৃত্তি। এই মুহূর্তে ভারতে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রয়েছেন শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা। কিন্তু যেভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভেঙে-বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে বিজয়ের উল্লাস দেখিয়েছে তা নিয়ে ইতিমধ্যে নিন্দার ঝড় উঠছে সর্বত্র। অন্যদিকে বাংলাদেশ সংসদে ঢুকেও ভাঙচুর চালানো হয়।