বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: দিন দুয়েক আগে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছিলেন বাংলায় তৃণমূল যে একা লড়াই করবে, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করে দিয়েছেন। তারপরেও কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে আশাপ্রকাশ করেছেন। উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি এবং দিল্লি-সহ তিন রাজ্যে আপের সঙ্গে সমঝোতার পরে বাংলা ও মহারাষ্ট্রেও জোট গড়তে করতে আশাবাদী কংগ্রেস। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে যে সময় রয়েছে, তাতে কংগ্রেস সময়ের বিরুদ্ধে দৌড়চ্ছে।
বাংলার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে দুটি আসন দেওয়ার পক্ষপাতী। শেষ ঘোষণায় তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনের পরে জোটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। সূত্রের খবর এই সংখ্যা বেড়ে পাঁচ হয়েছে। মালদহ দক্ষিণ ও বহরমপুরের সঙ্গে দার্জিলিং, রায়গঞ্জ ও পুরুলিয়া যুক্ত হয়েছে তালিকায়। যদিও তৃণমূল এব্যাপারে কোনও মন্তব্যে নারাজ। অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার পক্ষপাতী।
যদিও তারপরেও কংগ্রেস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্তত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের কথা থেকে তা স্পষ্ট। অন্যদিকে অধীর চৌধুরী নিশানা করছেন তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ফলে তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যেই মতপার্থক্য স্পষ্ট এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে রাহুল গান্ধী যখন ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দিয়ে যান, তখন বামেরা তাতে যোগ দিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা অন্য কোনও তৃণমূল নেতা তাতে যোগ দেননি। সেই পরিস্থিতিতে যদি এই দুই দল যৌথ প্রচারের পরিকল্পনা করে এবং ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করে, তাহলে তাদেরকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একংশ।
অন্যদিকে মহারাষ্ট্রেও এখনও ইন্ডিয়া ব্লক আসন সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তবে কংগ্রেস, শিবসেনা এবং এনসিপি-শারদ গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত মহা বিকাশ আঘাধিক আসন সমঝোতা চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিষয়টি নিয়ে উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে নির্বাচনের আগে অশোক চবন, মিলিন্দ দেওরা ও বাবা সিদ্দিকির দল ছাড়ায় কংগ্রেস মহারাষ্ট্রে বড় ধাক্কা খেয়েছে।
মহারাষ্ট্রে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হলে, তিনটি দলকে যৌথ প্রচার শুরু করতে হবে। নির্বাচনের দিন ঘোষণা না হলেও, নির্বাচনের আগে সময় বেশি নেই। ফলে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে সেখানকার পরিস্থিতি।
উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি এবং হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, গুজরাত ও গোয়ায় সমাজবাদী পার্টি ও আপের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হলেও, কংগ্রেসের বড় চ্যালেঞ্জ হল তৃণমূল স্তরের নেতাদের অনুভূতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বৃহত্তর ঐক্য তৈরি করা। সেই লক্ষ্যে কংগ্রেস কতটা পৌঁছতে পারল তা বলে দেবে নির্বাচনের ফলাফলই।