বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
মরসুমের শুরু থেকেই তিনি ছিলেন লাল হলুদ জনতার স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। ডুরান্ডের প্রথম ডার্বিতে জয় পেয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মন জিতে নিয়েছিলেন কার্লোস কুয়াদ্রাত। আর কলিঙ্গ ডার্বিতে জয়ের পর ইস্টবেঙ্গল সদস্য-সমর্থকদের কাছে ম্যাজিক ম্যান হয়ে উঠেছেন কুয়াদ্রাত স্যার। ডার্বি জয়ের পর সমর্থকদের উচ্ছাস থাকলেও তাঁর মধ্যে বাড়তি কোনও উচ্ছাস নেই, বরং তাঁর লক্ষ্য যে এবার ট্রফি।
শুক্রবার রাতে ভুবনেশ্বরে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের বাইরে দেখা গেল এক অভিনব দৃশ্য। যা দীর্ঘদিন কোন বড় ম্যাচ জয়ের পর লাল হলুদ শিবিরে দেখা যায়নি। মোহনবাগান এসজিকে হারানোর পর ইস্টবেঙ্গল কোচ কুয়াদ্রাতকে ঘিরে সমর্থকদের উচ্ছাস ছিল দেখার মতো। অনেকে মিলে তাকে কাঁধে তুলে নেন, স্প্যানিশ বসের কাছে একটাই আবদার। এবার ট্রফিটা জিততে হবে স্যার।
প্রতিপক্ষের তুলনায় অনেক কম বাজেটের দল। কিন্তু মরসুমের শুরু থেকেই সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই ফুটবলারদের থেকে সেরা পারফরম্যান্স বার করে আনার চেষ্টা করেছেন। বিগত কয়েক মাসে ইস্টবেঙ্গল দলটার আমূল কোনও পরিবর্তন তিনি এখনও করে উঠতে পারেননি। কিন্তু দিন বদলের বার্তা দিচ্ছে কুয়াদ্রাতের রণকৌশল। ডার্বি মানেই এখন শুধু হার নয়, জয়ও।
সুপার কাপের গ্রুপ পর্বের ডার্বিতে যে ফুটবলটা খেলল ইস্টবেঙ্গল তাতে দলটা আগের থেকে অনেকটা বদলে গিয়েছে পরিষ্কার। ১ গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েও যেভাবে কামব্যাক করে ৩-১ গোলে জিতল দলটা তা অনবদ্য। ম্যাচ শেষে টিম বাসে উঠার আগে শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের আলিঙ্গনে বদ্ধ হলেন কুয়াদ্রাত।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে লাল হলুদ কোচ বলেন, “আমরা একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। সেখানে বড় ম্যাচে জয় পাওয়টা খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। ডুরান্ড ডার্বির আগে শুনেছিলাম মোহনবাগান আমাদের ৫-০ গোলে হারাবে। তাই সেই ডার্বি জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘ এই জয়ের গুরুত্বও অপরিসীম। সবাই আমাদের দলকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। তবে আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আমাদের ট্রফি জয়টাই মূল লক্ষ্য।’
ম্যাচ প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাতের বিশ্লেষণ, ‘আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করছিলাম। তবে প্রতিপক্ষ দলই প্রথম গোল করে। কিন্তু ফুটবলারদের হাল না ছেড়ে পাল্টা আক্রমণের বার্তা দিয়েছিলাম। প্রথমার্ধেই সমতা ফেরানোর লক্ষ্য ছিল। আমরা প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছি। ওরা পেনাল্টি, ফ্রিকিক মিস করেছে। মোহনবাগান এসজি শক্তিশালী দল। তবে জানতাম ক্রমাগত আক্রমণ করে যেতে পারলে গোল আসবেই। এটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।”
অন্যদিকে ম্যাচের নায়ক ক্লেইটনের মুখে শুধুই দলের কথা। ডার্বিতে প্রথম গোল পেলেন। তাও একটি নয় দুটি। ম্যাচ শেষে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার বলেন, ‘আমি ম্যাচ জেতায় খুশি। এই বড় ম্যাচের গুরুত্ব আমরা সবাই জানতাম। তবে তিন পয়েন্ট পেয়ে আমি সবচেয়ে খুশি। আমরা সেমিফাইনাল খেলব। শুধুমাত্র আমার জন্য নয়, দলের জন্য ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘গত মরসুমেও আমি দলে ছিলাম। কিন্তু শেষ মরসুমটা আমাদের খুব একটা ভালো যায়নি। সেখান থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। আমি খুশি সমর্থকদের আনন্দ দিতে পেরে।’