বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের পরে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সব থেকে বড় দল হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেছেন প্রশান্ত কিশোর। তাহলে কি হিসেবে একথা বলছেন? তাহলে কি তিনি ধরে নিচ্ছেন, বাংলায় মুসলিম ভোটে ব্যাপক বিভাজন হবে? এমন কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে?
পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোট ৩০ শতাংশ। এর মধ্যে রাজ্যের অন্তত ১৮ টি আসনে ফলাফল বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে মুসলিম ভোট। ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনে এর বড় অংশ তৃণমূল তাদের দখলে রাখতে পেয়েছিল। সেই সময় তৃণমূলকে সরাসরি পরামর্শ দিতেন প্রশান্ত কিশোর।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, আইএসএফ এককভাবে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তা রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের ভাল ফলের পথে চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। কেননা বিজেপি ইতিমধ্যে রামমন্দির, সিএএ এবং রামনবমীর মতো ইস্যুতে ধর্মীয় মেরুকরণের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করছে।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, দেশের মধ্যে কাশ্মীর ও অসমের পরে পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসলিম ভোটার রয়েছে। তৃণমূল সরকারকে নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হলেও, ধর্মীয় সংখ্যালঘু নেতারা মনে করছেন, বিজেপির মোকাবিলায় তৃণমূল এখনও অনেকটাই বিশ্বাসযোগ্য।
সংখ্যালঘু ভোটের বিভাজন যাতে না হয়, তার জন্য ইমাামরা আবেদন করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। এঁদের মধ্যে রেড রেডে নমাজ পরিচালনাকারী কাজি ফজলুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের কিছু আসনে বাম-কংগ্রেস সব থেকে উপযুক্ত হলেও অনেক আসনে তৃণমূলই পছন্দের। তবে ইমামদের আবেদন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন কতটা শুনবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের মতো জেলাগুলিতে থাকা আসনে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের প্রার্থীদের কঠিন লড়াই হতে পারে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুর, মালদহের আসনগুলিতে ভোট বিভাজনে বিজেপি সাফল্য পেলেও, ২০২১-এর নির্বাচনে ফল গিয়েছিল তৃণমূলের পক্ষে, বলেছেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অমর্ত্য সেনের প্রতীচি ট্রাস্টের গবেষক সাবির আহমেদ বলেছেন, তৃণমূলের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের কারণে সংখ্যালঘুদের জনসমর্থনের অনেকটাই তাদের দিকে।
তৃণমূলের দাবি, বাংলায় বাম-কংগ্রেস হল বিজেপির বি টিম। অন্যদিকে বিজেপির দাবি তিন তালাক-সহ বিভিন্ন কারণে সংখ্যালঘু মহিলাদের একাংশের ভোট তাঁরা পাবেন।
তবে বাম-কংগ্রেসের তরফে ২০২৩-এর সাগরদিঘি উপনির্বাচনের কথা তুলে ধরা হচ্ছে। তার পরবর্তী সময়ে নিয়োগ দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন অভিযোগ আরও সামনে এসেছে। ফলে সংখ্যালঘু ভোট তাদের দিকে ফিরছে, যা তৃণমূলকে আতঙ্কিত করছে বলেও দাবি বাম-কংগ্রেসের। আবার আইএসএফের দাবি তারাও সংখ্যালঘু ভোট পাবেন যথেষ্টই। ফলে সংখ্যালঘু ভোট যদি তৃণমূল, বাম-কংগ্রেস ও আইএসএফের মধ্যে বিভাজিত হয়ে যায়, তাহলে বিজেপি যে বঙ্গে বাড় বাড়ন্ত হবে, সেকথা ধরেই নেওয়া যায়, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। তবে ঠিক কী হতে যাচ্ছে অর্থাৎ ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৪ জুনের জন্য।