বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে এনআইএ-র ওপরে হামলা নিয়ে রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এদিন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে।


প্রসঙ্গত ২০২২-এর দোসরা ডিসেম্বরে বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে গভীর রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে যায় এনআইএ-র দল। বলাই মাইতি, মনোব্রত জানাকে আটক করে বেরিয়ে আসার সময় গ্রামবাসীদের একাংশ এনআইএ-র গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। তারপরেই গাড়িতে ইট ও পাথর ছোড়া হয়। এই ঘটনায় এক এনআইএ আধিকারিকের মাথা ফাটে। পরে ওই দুই তৃণমূল নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে এনআইএ।

এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ভূপতিনগর বোমা বিস্ফোরণ মামলার তদন্তকারী এনআইএ টিম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভূপতিনগরে হামলার শিকার হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে এবং যেহেতু নিয়ন্ত্রণ এখন ভারতের নির্বাচন কমিশনের হাতে, তাই সময় এসেছে ভূপতিনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, এসডিপিও কন্টাই, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।

তিনি বলেছেন, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বারবার প্ররোচনার কারণে হয়েছে। বিরোধী দলনেতা বলেছেন, সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের আক্রমণ করার পরেও, তৃণমূলের নেতারা এখনও আক্রমণ করার সাহস করতে পারে। এব্যাপারে শুভেন্দু অধিকারী কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রীর এনআইএ-কে নিয়ে করা মন্তব্যও তুলে ধরেছেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, এনআইএ টিম বলাই মাইতি এবং অন্যদের, যারা সমন পাওয়ার পরে সহযোগিতা করেনি তাদের গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল। পরিবর্তে এই টিএমসি নেতারা কীভাবে জাতীয় তদন্ত সংস্থার অফিসারদের ওপর আক্রমণ করবেন তার পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ২০২২-এর দোসরা ডিসেম্বরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল ভূপতিনগর। কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগের রাতে ঝলসে মৃত্যু হয় অন্তত তিনজনের। তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না, তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েনের বিরুদ্ধে বেআইনি বাজি কারবারের অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় বিরোধী দলনেতা ওই বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্ত দাবি করেছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে এনআইএ তদন্ত শুরু করেছে।

গত মাসের শেষের দিকে বলাই মাইতি, মনোব্রত জানা-সহ আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে এনআইএ। কিন্তু সবাই নির্বাচনে ব্যস্ত থাকার অজুহাতে যাননি। অন্তত দুইবার এই নেতারা এনআইএ তলব এড়িয়ে যায় বলে দাবি এনআইএ সূত্রের।
তারপর গভীর রাতে এলাকায় অভিযান চালায় এনআইএ। এনআইএ-র একটি দল যায় ভূপতিনগর থানায়। অন্যদলটি যায় গ্রামে। দুই নেতা-কর্মীকে ধরে নিয়ে আসার সময় লাঠি হাতে মহিলারা পথ আটকে আটকদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি করে। সেই সময় গাড়িতে পাথর-ইঁট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তাতে মাথা ফাটে এক এনআইএ আধিকারিকের।

এই বছরের শুরুতে ৫ জানুয়ারি তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়া ইডির ওপরে হামলা হয়। এরপর বনগাঁয় শঙ্কর আঢ্যর বাড়িতে তল্লাশি যাওয়া ইডির আধিকারিকদের ওপরেও হামলার ঘটনা ঘটে। এদিনের ঘটনার মতো ওই দুই ঘটনাকে তৃণমূলের তরফে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা বলে বর্ণনা করা হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *