বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল হয়েছিল ২০১৯-এর অগাস্টে। তারপর থেকে বৃহস্পতিবারে প্রথমবার জম্মু ও কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রী মোদী। এদিন তিনি শ্রীনগরের বকসি স্টেডিয়ামে ‘বিকশিত ভারত, বিকশিত জম্মু-কাশ্মীর’ অনুষ্ঠানে বর্তমানে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য ৬৪০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন।
এদিন তিনি জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছেন, শ্রীনগরের মানুষদের মধ্যে থাকতে পেরে তিনি আনন্দিত। তিনি মন জয় করতে (দিল জিতনে আয়া হু) এসেছেন, বলেও জানান। তিনি বলেন, এদিন যেসব উন্নয়ন প্রকল্পগুলি উৎসর্গ করা হচ্ছে তা জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নকে বৃদ্ধি করবে। উন্নত ভারতের জন্য উন্নত জম্মু ও কাশ্মীর অগ্রাধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষের সুরে বলেন. একটা যুগ ছিল, যখন জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। তিনি বলেন, এমন একটা যুগ ছিল, যখন দেশের অন্য অংশের আইন জম্মু ও কাশ্মীরে প্রয়োগ করা যায়নি। দেশে দরিদ্র কল্যাণের জন্য প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের সময় জম্মু ও কাশ্মীরের ভাই-বোনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। কিন্তু এখন সময় বদলেছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
কংগ্রেসকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তারা শুধু জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষকেই নয়, ৩৭০ ধারা নিয়ে পুরো দেশকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি বলেন, এখানে আসারঅ অনুভূতি অনন্য। গত কয়েক দশক ধরে এই জম্মু-কাশ্মীরের জন্য অপেক্ষা করছিল সকলে। তিনি কাশ্মীরবাসীদের উদ্দেশে বলেন, কাশ্মীরিদের ভালবাসার এই ঋণ শোধ করতে কোনও কসরত ছাড়বেন না মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মীর শুধু একটি অঞ্চল নয়, দেশের জন্য বড় কিছু। সেখানে উন্নয়নের শক্তি, পর্যটনের সম্ভাবনা, তরুণদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। বিকশিত জম্মু-কাশ্মীর বিকশিত ভারতের অগ্রাধিকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁকে বলা হয়েছে, ২৮৫ টি ব্লকের একলক্ষ লোক এদিনের সভায় যোগ দিয়েছে। এজন্য তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেছেন, নতুন জম্মু ও কাশ্মীরের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত এবং চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার সাহস রয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রায় হাজার সরকারি কর্মীকে নিয়োগপত্র তুলে দেন। পাশাপাশি তিনি মহিলা, কৃষক, উদ্যোক্তা-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী সফর উপলক্ষে এদিন কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। ড্রোন ও সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশে দুই কিমি ব্যাসার্ধ ছিল নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। শ্রীনগরে প্রধানমন্ত্রীর আসা-যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি স্কুলকে বুধবার ও বৃহস্পতিবার বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইসব স্কুলে বৃহস্পতিবারের বোর্ড পরীক্ষা আগামী মাস পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়া হয়। জলে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড থামাতে থিলম নদী ও ডাল লেকে মেরিন কমান্ডো মোতায়েন করা হয়।