বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:ক্ষমতা থাকলে নাম নিয়ে বলুন। আপনার কালীঘাটের বাড়ির সামনে গিয়ে জবাব দিয়ে আসব। তমলুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা অভিযোগ নিয়ে এভাবেই সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মমতা তাঁকে ফের গদ্দার কটাক্ষে বিঁধেছেন শুনে শুভেন্দুর পাল্টা, উনিই তো সবচেয়ে বেশি গদ্দার। তার কারণও ব্যাখ্য়া করলেন শিশির অধিকারীর পুত্র। মুখ খুললেন তাপস রায়ের দলত্যাগ প্রসঙ্গেও।
তাপস রায় তৃণমূল ত্যাগ করার পর বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা চলছে। তাঁকে উত্তর কলকাতা লোকসভা আসনে প্রার্থী করার সম্ভাবনাও জোরালো হচ্ছে। যদিও শুভেন্দুর দাবি, তাপস রায়ের কাছ থেকে এখনও আমাদের কাছে কোনও প্রস্তাব আসেনি। তা এলে উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির মতামত চাওয়া হবে।
উত্তর কলকাতার বিজেপি নেতৃত্ব রাজি থাকলে আমাদের একটা কমিটি আছে, এতে আমি ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রয়েছি। সেই কমিটিতে আলোচনার পর কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাব। তবে এ রাজ্যে বিশিষ্ট নেতৃত্বের অন্যতম তাপস রায়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
শুভেন্দুর কথায়, বিধানসভাতেও তাপস রায় সুবক্তা ছিলেন। তিনি মন্ত্রী হয়েছিলেন, চার-পাঁচবার বিধায়ক হন, কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদ ছিলেন। বর্তমানে তৃণমূলের ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। তৃণমূল প্রতিষ্ঠার আগে থেকে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলেন, কয়েক দশক ধরে রাজনীতি করছেন।
শুভেন্দু আরও বলেন, তাপস রায় চোরেদের পার্টির পরিবারতন্ত্র, কোম্পানির মালিকানার বিরুদ্ধে যেভাবে সরব হয়ে পদত্যাগ করলেন তাকে স্বাগত। যে ভাষাতে তিনি আজ সাংবাদিকদের সামনে ‘চোরদের রানি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন তাতে তিনি আগামী দিনে দৃঢ় পদক্ষেপেরই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মমতাকে সবচেয়ে বেশি গদ্দার বলে অভিহিত করে শুভেন্দু বলেন, রাজীব গান্ধী ওঁকে পরিচয় দিয়েছেন, তাঁর পিছন থেকে ছুরি মেরেছেন। অটলবিহারী বাজপেয়ী আশ্রয় দেন, তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। উনি নিজেকে বিরাট ভাবেন। প্রধানমন্ত্রী হবেন? ক্ষমতা থাকলে আমার নাম নিয়ে বলুন, কালীঘাটে আপনার বাড়ির সামনে মঞ্চ বেঁধে জবাব দিয়ে আসব।
শুভেন্দু আরও জানান, ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর শ্যামবাজারে এক বাড়িতে প্রশান্ত কিশোর, মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌগতর ফোনের স্পিকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে আমাকে দলত্যাগ না করার জন্য পা ধরতে বাকি রেখেছিলেন। উনি তমলুকে আমাকে যত বেশি আক্রমণ করবেন, তত বেশি ভোটে লোকসভা নির্বাচনে হারবেন।
তমলুকের সভায় উন্নয়নের খতিয়ান দিতে গিয়ে নিজে রেলমন্ত্রী থাকাকারীন বাংলায় রেল প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা। তাঁর প্রকল্পকে বিজেপি ফিতে কেটে উদ্বোধন করছে বলেও মন্তব্য করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তার পাল্টা শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান শুভেন্দু।
শুভেন্দুর কথায়, উনি তমলুকে সভার করুণ চিত্র দেখে এসেছেন। নরেন্দ্র মোদী এবারের রেল বাজেটে ১৩ হাজার কোটি টাকা বাংলার জন্য বরাদ্দ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বছরে বাংলার জন্য বরাদ্দ আর নরেন্দ্র মোদীর সময় বাংলার জন্য বরাদ্দ সংক্রান্ত শ্বেতপত্র প্রকাশ করলেই এপাং-ওপাং-ঝপাং হয়ে যাবে।