বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: সোমবার বেলা ১টা। হিলকার্ট রোডে তখন যানজট। রাস্তার দু’ধার দিয়ে বিধান মার্কেটে যাওয়া-আসা করছেন ক্রেতারা। আর তার ফাঁকেই শুরু হয় যানজট। পরিস্থিতি এমনই যে কোনওভাবে এগোনোর চেষ্টা করছিলেন শহরের বাসিন্দা প্রদীপ দাস।

 

ক্ষোভের সুরে তিনি বলছিলেন, ‘বিধান মার্কেটে ক্রেতাদের যাওয়া-আসাকে কেন্দ্র করেই যদি এই পরিস্থিতি থাকে, তাহলে দর্শনার্থীদের ঢল নামলে কী পরিস্থিতি হবে?’ একই কথা বলতে শোনা গেল শহরের আর এক বাসিন্দা অভিজিৎ দাসকে। যানজট এড়াতে এদিন হিলকার্ট রোডের সঙ্গে মহানন্দাপাড়ার সংযোগকারী রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ি যাতায়াত করতে গিয়ে সেই রাস্তাতেও যানজট শুরু হয়। পরিস্থিতি এমনই হয় যে রাস্তা সংলগ্ন ফুটপাথের ওপর দিয়ে বাইক, স্কুটি হেঁটে নিয়ে যেতে হয় যানজটে আটকে পড়া মানুষজনকে। এই পরিস্থিতিতে এবারের পুজোয় যানজটই যে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে, সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না পুলিশ প্রশাসনেরও।

শহরের সারাদিনের পরিস্থিতি নজর এড়ায়নি পুলিশ প্রশাসনের। সোমবার বিকেলে তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। সেখানে পুলিশের পদস্থ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, ‘পুজোর দিনগুলোয় শহর যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সেজন্য আমরা যাবতীয় চেষ্টা চালাব। তাছাড়া যানজটের বিষয়টা মাথায় রেখে বেশ কিছু ডাইভারশনও করা হয়েছে।’ পুজো গাইড অ্যাপও এদিন প্রকাশ্যে আনা হয়।

পুজোর আগেই শহরে তৈরি হওয়া দিনভর যানজট রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ ফেলল পুলিশ প্রশাসনে। এমনকি যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন মোড়ে কয়েক সেকেন্ডের জন্য সবুজ বাতি দিয়েই ফের লালবাতি করতে হল ট্রাফিক পুলিশকে। যার জেরে প্রতিটি মোড়েই কম করে হলেও পনেরো-কুড়ি মিনিটের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হল শহরের সাধারণ মানুষকে।

এদিন বিধান রোড ধরে ভেনাস মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন অমরেশ রায়। বেশকিছুক্ষণ সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকার পর সবুজ সিগন্যাল পেতেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। যদিও এরমধ্যেই ফের বাতি লাল জ্বলে যায়। যা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অমরেশ। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই গরম। তারমধ্যে যদি এরকম যানজট চারিদিকে থাকে, তাহলে কিছু বলার নেই।’

তবে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই পরিস্থিতি আরও বেগতিক হয়ে দাঁড়ায়। ইস্টার্ন বাইপাস হয়ে শান্তিনগর-বৌবাজার দিয়ে দেশবন্ধুপাড়ায় আসতে এদিন টোটোচালক অনীক রায়ের সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টারও বেশি। তিনি বলছিলেন, ‘এমন যানজটের মুখে তো আগে সেরকম পড়িনি। সত্যি খুবই অস্বস্তিকর যানজটের মধ্যে পড়তে হয়েছে।’ এদিকে, পরিস্থিতি ক্রমেই জোরালো হতে থাকায় এদিন শুধু সাংবাদিক সম্মেলন করেই নয়, রাতের দিকে বিভিন্ন মোড় পরিদর্শন করতে বেরিয়ে পড়েন ডিসিপি নিজেই।
তবে যত নিয়মে করা হোক না কেন, আর যত আইন আসুক না কেন যানজটের যন্ত্রণা থেকে আপাতত মুক্তি পাওয়া মুশকিল শিলিগুড়ি মানুষের। এমনিতেই জায়গা কম লোক বেশি বলেন সবাই, আর এখন বলেন জায়গা কম গাড়ি বেশি। তাই আপাতত আমাদের তাকিয়ে থাকতে হবে আইনের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *